সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

বিশ্বাস, মতামত ও বিতর্ক বিষয়ে মনীষী বার্টান্ড্র রাসেল

যদি আপনার নিজের মতের বিপরীত কোনো মতামত আপনাকে রাগায় দেয়, তাহলে এটা একটা আলামত যার মানে আপনি ভিতরে ভিতরে জানেন যে আপনার মতো চিন্তা করার কোনো যথাযথ কারণ নাই। যদি কেউ ধরে রাখে যে দুই এবং দুই পাঁচ, অথবা আইসল্যান্ড নিরক্ষরেখায় আছে, আপনার রাগের পরিবর্তে করুণা বোধ করা উচিত, যদি না, আপনি পাটিগণিত বা ভূগোল সম্পর্কে এত কম জানেন যে তার মতামত আপনার নিজের বিপরীত বিশ্বাসকে ঝাটকা দেয়।      সবচেয়ে বেশি কামড়াকামড়ি সেই বিষয়গুলা নিয়ে যেগুলার আসলে কোনপক্ষেই কোনো ভাল প্রমাণ নাই৷ ধর্মতত্ত্বে জবরদস্তির জায়গা আছে, পাটিগণিতে নাই, কারণ পাটিগণিতের মধ্যে জ্ঞান আছে, ধর্মতত্ত্বে আছে শুধু মতামত। সুতরাং যখনই আপনি মতপার্থক্যের জন্য নিজেকে গোস্যা হতে দেখবেন, তখন সাবধান; পরীক্ষা করলে সম্ভবত দেখবেন যে, আপনার বিশ্বাস হাঁটা দিচ্ছে যুক্তির ফরমানের বাইরে।      — বার্ট্রান্ড রাসেল, বুদ্ধিবৃত্তিক আবর্জনার রূপরেখা (১৯৪৩) ছবি: বার্ট্রান্ড রাসেল তাঁর যুক্তরাজ্যের বাড়ির পড়ার ঘরে, ১৩ নভেম্বর ১৯৫৪ সালে।

আমার নির্মাণ

মার্শাল ম্যাকলুহান এবং প্রাযুক্তিক নির্ণয়বাদ

মার্শাল ম্যাকলুহান একজন কানাডীয় পণ্ডিত। তাঁর বিখ্যাত উক্তি: মাধ্যমই বার্তা। তাঁর গবেষণাকে প্রাযুক্তিক নির্ণয়বাদ বলে। তাঁর দুইটি মূল কথা: (১) প্রযুক্তি একটি আশীর্বাদ (২) সভ্যতা হলো প্রযুক্তির অগ্রযাত্রা "মাধ্যমই বার্তা" বলতে ম্যাকলুহান বুঝিয়েছেন মাধ্যম বা মিডিয়া হলো ভাষা, যার রয়েছে- (১) নিজস্ব কাঠামো (২) ব্যাকরণ ব্যবস্থা ফলে তাদেরকে সেই অনুযায়ী পাঠ করা সম্ভব।  মাধ্যম ক্রমাগত আকার ও পুনরাকার পেয়ে থাকে।  মৌলিক ভাবনা ১। মাধ্যম ও বার্তার মধ্যকার নতুন সম্পর্ক উদ্ভাবন ২। মানব ইতিহাসের ব্যাখ্যা এবং ৩। দুই ধরনের মাধ্যমের সংজ্ঞা।  জুলাই ২১, ১৯১১ - ৩১ ডিসেম্বর, ১৯৮০ মাধ্যমই বার্তা যোগাযোগের উদ্দ্যেশ্যে অন্তর্গত বার্তাটি যাই হয়ে থাকুক, মাধ্যম নিজেই একটি বার্তা।  যোগাযোগ মাধ্যম নাটকীয়ভাবে আমাদের ইন্দ্রিয়ানুভূতির ধরন এবং চিন্তাভাবনার উৎসকে বদলে দিচ্ছে৷ ফলে বদলে যাচ্ছে আমাদের সামাজিক কাঠামো।  মাধ্যম হলো ব্যক্তির পরিবর্ধন। মাধ্যম জুড়ে পাঁচটি ইন্দ্রিয়ই ছড়িয়ে আছে৷ যার অর্থ-- ১। প্রতিটি মাধ্যম নিজস্ব শ্রোতা তৈরি করে। ২। মাধ্যম শেষ পর্যন্ত তার উপকরণের বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করে দে...

আমি কী ভাবসি সেইটা এতদিনে আর প্রাসঙ্গিক নাই

আপনি একটা প্রেমিক চাইসিলেন; বুরবাক আমি ভাবসি আমারে চাইসেন। পরে টের পাইসি একটা  দারুণ প্রেমিকের বিনিময়ে আপনি আমারে ঠিকই ছাইড়া দিতে পারতেন।

বিলম্বিত শোক বিজ্ঞপ্তি

২০২০ সালের মাঝামাঝি কোনো এক সময়ে, আমি মারা গেছি, হয়তো কোভিড ১৯-এ আক্রান্ত হয়ে। আমার জীবদ্দশা ছিল আশ্চর্য সুন্দর। 

THE ART OF SEDUCTION by Robert Greene

রবার্ট গ্রিন এখানে ‘সিডাকশন’ কথাটাকে ব্যবহার করেছেন শুধুমাত্র যৌন প্রলোভন হিসেবে নয়, বরং আরো ব্যাপক অর্থে—রাজনৈতিক, সামাজিক বা অন্যান্য ক্ষেত্রে যেই প্রলোভন প্রযোজ্য। এই প্রলোভনের নীতিগুলো জানলে নিজেকে ও নিজের সম্পর্কগুলোকে আরেকটু ভালোভাবে ঝালাই করা যাবে। সেইসাথে তাদের প্রয়োগ করা যাবে ব্যক্তিগত ও পেশাদার জীবনে।    সারকথা প্রলোভন ব্যাপারটাই মনস্তত্ত্বের খেলা, সৌন্দর্যের না। ফলে এই খেলার একজন ওস্তাদ হয়ে ওঠা যেকোন মানুষেরই আয়ত্ত্বে আছে। এমন নয় যে, একজন প্রলোভনকারী তার ক্ষমতাটাকে একবার চালু আর একবার বন্ধ করেন—প্রতিটা সামাজিক ও ব্যক্তিগত লেনদেনই তার কাছে প্রলোভনের একেকটা সুযোগ। সুযোগের একটা মুহূর্তও নষ্ট করার নাই। প্রলোভনকারীরা কখনো আত্মনিমগ্ন থাকে না। তাদের দৃষ্টি থাকে বাইরের দিকে, ভিতরের দিকে নয়।  প্লেজার বা পুলক হলো আমাদেরকে আমাদের সীমার বাইরে টেনে নিয়ে যাওয়ার অনুভূতি, উদ্বেলিত করে দেওয়ার অনুভূতি—তা হতে পারে মানুষের দ্বারা, বা কোনো ঘটনার দ্বারা।  শেষত, যারা কিনা প্রলোভনকারী, তাদের দুনিয়াদারির সাথে নৈতিকতা ব্যাপারটার সম্পর্ক একদম নাই। প্রতিটা প্রলোভনের দুইটা উপাদান থাকে...

তুমি দেখা দাও আরো কম

তুমি লন্ড্রিতে যাইতে নিলেই প্রতিবার আমারে ডাকবা না। তোমার দেখা পাইতে চাই আরো কম।  কইলেই যখন-তখন বারান্দায় আসবা না। বলবা, ঘরে আম্মা আছে, বুয়া আছে, ভাবি আছে। যা মন চায় বলবা।  আমি চাই, তোমারে আরো কম কম দেখব। বরং আমি চাই, তোমারে কল দিতে যেয়ে দ্বিধা করব। বরং অনিকের জন্মদিনে আমি গোপনে তোমারে খুঁজব, তোমার গায়ে পড়া খালতো বোনটারে দেখব, তোমারে দেখব না। মাইয়া যখন কথায় কথায় কাছে ঘেঁষে দাঁড়াবে, আমি ওর মধ্যে তোমারে খুঁজে হতাশ হব। তোমার বাসার সবাই যেদিন আমাদের বাসায় বেড়াতে আসবে, সেদিন যেন তোমার পিএল থাকে। আমার আম্মা বলবে, 'তাও আনতেন--' আমি কোক কিনতে বাইর হওয়ার আগে কান পাইতা শুনব তোমারে নিয়ে একটা লাইন বাড়তি কী কথা হয়। তোমার ভাইস্তারে পড়ানোর সময় তুমি কালেভদ্রে এসে দাঁড়াবা। এক-দুইটা কথার পর আমার জড়তারে অনাগ্রহ ভাইবা 'আচ্ছা আপনাদের ডিস্টার্ব না করি' বলে চলে যাবা। আমি চাইব আরেকটু ডিস্টার্ব কর কিন্তু বলতে পারব না। ওইরকম চাই। আমি তোমারে যত বেশি পাইতে চাই তার চেয়ে বেশি খুঁজতে চাই।  আমি রাস্তাঘাটে তোমার পোশাকের মেয়ে দেখে চমকায় চমকায় উঠতে চাই। সাইনবোর্ডে তোমার নাম দেখলে জোরে জোরে নিশ্বাস নিতে চ...