সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী

ইন্দুবালার সাথে আমার সাক্ষাৎ এক সপ্তাহ আগে এই মহাকাশযানডা ক্ষয়ে গেসে, সব অর্থেই গেসে এক্কেরে, ভিতর আর বাইরে থেকে। আরোই ক্ষইতেসে দিন দিন, ঝুরঝুরায় পড়ে যাইতেসে সব পার্টস-পুটস। এত উথালপাথাল এত কিছুÑশেষমেশ দেখা গেল কিছুই বদলায় নাই, কিছুই ঠেকানো যায় নাই। অস্থিরতায় আমিও মাতসিলাম, নাদান ছিলাম, কী যে চাইসিলাম ঠিকমতো বুঝি নাই। এখন এইটুকু বুঝি যে, আমি আর অন্যের জন্য কিছু চাই না।  চার সৌর বছর আগে এই লক্করঝক্কর মহাকাশযানটার নাম ছিল দক্ষিণযান। এখন নাম দিসি আলগাযান, আগেও এটাই ডাকতাম, ভালোবেসে, আর এখন কাগজে-কলমে। অবকাঠামোর বেহাল দশা ওই সময়কার সংঘর্ষের কারণেÑযেটারে এখন আমরা বলি ‘গ্যাঞ্জাম’। উত্তরযান থেকে লেলানো অরির ঝাঁক এসে লাখ লাখ অধিবাসী মেরে তুছরা করে দিসে। অরিপোকার হুলের ঘা শুকাইতে না শুকাইতে, নিঙড়ানো নাড়িভুড়ির স্তূপের গন্ধ টাটকা থাকতেই, হায় সে কী দুর্ভিক্ষ। আলগাযানে উত্তরের সেক্টরগুলাতে মেরামত হইসিল না, তারপর থেকে বিষাক্ত হাওয়া ঢুকে ছেলেবুড়া মুখ দিয়ে রক্ত উঠে নাশ হইসে। মাঝে মাঝে মনে হয় কী পুরা জাহাজটাতেই বিষ ছড়ায় আছে। আজকাল এটা একটা পাগলাগারদে পরিণত হইসে। দারোয়ানহীন গারদ। একজন আরেকজনরে ছিঁড়ে...

তেঁতুল বনসাই

মনেও থাকে না যে রমজান মাস চলে। চারদিকে কেউ-না কেউ কিছু-না কিছু খাচ্ছে। পথের ধারে কয়েকজন মিলে টেবিল বসিয়ে লেমনেড বিক্রি করে টাকা তুলছে। সম্ভবত যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ থেক আগত শরণার্থীর জন্য। টেবিলে একটা সাদা ডেস্ক ক্যালেন্ডারের আকৃতিতে কাগজের জিনিসটা রাখা, ফোল্ডেড প্ল্যাকার্ড? তাতে কী লেখা দূর থেকে পড়া যায় না। লেখার নিচে কিউ-আর কোড। যে ক্যাম্পাসেই যাই সেখানেই এখন এটা একটা পরিচিত দৃশ্য, টাকা তোলার দৃশ্যটা। চাঁদা আদায়কারী চেয়ার থেকে ঝুঁকে এগিয়ে হাতে লিফলেট ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। এখানে তিনজন অবশ্য অনেকটা ঝিমাচ্ছে। সচরাচর ইমিগ্রান্টরা এসব দান-খয়রাতে উৎসুক হয়ে অংশ নেয়। আমি যেটা করি সেটা হলো পাশ কাটিয়ে চলে যাই। অত্যুৎসাহী কেউ কথা বলার জন্য থামাতে চাইলে ব্যস্ততার দোহাই দেই। এখানকার ছাত্রছাত্রী অনেক ভদ্র। অনেক ক্যাম্পাসে আমি শুনতে পাই পিছনে গালি দিচ্ছে।   শীত সদ্য বিদায় নিয়েছে। ঘাসের ওপর ফ্রিসবি খেলছে তরুণ-তরুণীরা। কয়েকজন দূরে দূরে রোদে বসে গিটার বাজাচ্ছে। তাদেরকে ঘিরে আরো ছেলেমেয়ে। একজন ছাত্রী চিত হয়ে শুয়ে বই পড়ছে গাছের ছায়ায়। পায়ের ওপর পা তোলা। দৃশ্যটা অনেকটা ছায়াছবির মতো। কিছুটা দূরে আর...

চলচ্চিত্র তত্ত্বে লাকাঁর মনোসমীক্ষণ

মঁসিও জাক লাকাঁ (১৯০১–১৯৮১) একজন ফরাসি মনোবিদ। চলচ্চিত্র তত্ত্ব অধ্যয়নে তাঁর মনোসমীক্ষণ বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।  লাকাঁ বলছেন, মানব সন্তানের জন্ম থেকেই তার মধ্যে একটি অভাববোধ থাকে। সে স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। এই বোধকে লাকাঁ বলছেন ‘হতে-চাওয়া’। একজন ব্যক্তি তার সারা জীবনই এই অভাববোধকে পূরণ করতে চায়। বাস্তবে যা কখনো পূরণীয় নয়। সে যার অভাব বোধ করে লাকাঁ তার নাম দিয়েছেন ‘ছোট অপর’। মানব জীবনের একেক পর্যায়ে এই অভাবের আকার ও অভিজ্ঞতা ভিন্ন ভিন্ন হয়। যেমন, জন্মের পর মানবশিশু জৈবিক চাহিদা (ক্ষুধা-তৃষ্ণা-যৌনতা) নিবারণের জন্য সার্বক্ষণিকভাবে তার মায়ের ওপর নির্ভরশীল থাকে। তাই সন্তান মাকে ও নিজেকে মিলিয়ে নিজের সম্পূর্ণতা কল্পনা করে। সে ও তার মা অভিন্ন। মায়ের স্তন হলো ‘ছোট অপর’ যার মধ্য দিয়ে সন্তানের সেই অভাববোধ মেটে। একে বলে প্রাক-ঈডিপাস পূর্ণতা। স্তন এখানে পেটের ক্ষুধা ও যৌন ক্ষুধা নিবারণের একের-ভিতর-সব প্যাকেজ। প্রাক-ঈডিপাস ধাপ শেষ হলে সন্তানের বিকাশে তিনটি নির্ণায়ক পর্যায়ের কথা বলছেন লাকাঁ। এই তিনটি হলো: আরশি পর্যায় (আমাকে চেনা), টুকি ঝাঁ খেলা (ভাষা শেখা), ইডিপাস কমপ্লেক্স (সমাজের নিয়মের কাছে আত্মসমর...