সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

জুলাই, ২০২৪ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

কাজের বুয়া সুফিয়া

দিন ২৮০ ফ্ল্যাট মালিক সমিতির সভামধ্যে সুফিয়া কাঁদতে কাঁদতে বলল, আপনাদের জন্য দিন-নাই রাত-নাই জন্তু জানোয়ারের মতো খাটাখাটনি করে শরিলের রক্ত পানি করতেসি। তাও আপনাদের কারো কারো চক্ষের বিষ হইলাম। আমি রাতে ঘুমাই না। লতিফরে জিগান, রাত জাইগা তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে আপনাদের জন্য দোয়া করি। আর আপনাদের ভাবে মনে হয় যেন আমি আপনাদের শত্রু। মনে হয়, ওই চুন্নীটাই আপনাদের জন্য ভালো ছিল।’ এই পর্যন্ত বলে সে একটু থামে। সভার মধ্যে নীরবতা। দেখতে দেখতে সন্ধ্যা আরেকটু ঘনালো। বুলবুল জিলানি বা কেউ একজন ছাদের সব বাতি জ্বেলে দেয়। আমরা জানি, এখন সুফিয়া তার বাবার কথা বলা শুরু করবে। বলবে, এই বাড়ি তোলার সময় কীভাবে ঠিকাদারি নিয়ে মারামারি করে তার মহান পিতা প্রাণ হারিয়েছে। তারপর, পৃথিবীতে আমরা ছাড়া তার কেউ নাই এই বলে পরের দফা বিশ্রীভাবে কাঁদতে শুরু করবে। সভাপতি বদরে আলির বউ মিসেস বদরে আলি জান্নাতারা সেই কান্না দেখে একটু পরপর আঁচলে চোখ মুছবেন। আমরা যারা সুফিয়াকে সহ্য করতে পারি না, সুফিয়ার কান্নাও আমাদের কানে অসহনীয় ঠেকে। উঠে যেতে পারি না, জিলানিরা পাহারা বসিয়ে রেখেছে। ছাদের দরজায় দাঁড়িয়ে সিগারেট ফুঁকছে সাদ্দাম। হয় এখন যেতে ...

What is Surveillance Capitalism? Shoshana Zuboff in Bangla

এই গল্পের শুরুটা খুব পরিচিত। ল্যারি পেজ ও সের্গেই ব্রিন যখন স্ট্যানফোর্ডের ছাত্র তখন তারা ‘গুগল’ নামের একটি সার্চ ইঞ্জিন তৈরি করেন। সার্চ ইঞ্জিন, অর্থাৎ যেখানে আপনি কোনো বিষয়ে খোঁজ করলে, ইন্টারনেট সে বিষয়ে যা যা জানে তা আপনার সামনে হাজির হবে। গুগল নামের এই সার্চ ইঞ্জিনের অনানুষ্ঠানিক মূলমন্ত্র ছিল: “শয়তান হব না”। তরুণ ল্যারি ও সের্গেই দু’জনেই ছিলেন বিজ্ঞাপনের বিপক্ষে কারণ তারা বুঝতে পেরেছিলেন এই নতুন দুনিয়া—ইন্টারনেট দুনিয়া—একে কলুষিত করবে বিজ্ঞাপন। একটি পরিচ্ছন্ন বিশ্বস্ত সার্চ ইঞ্জিন তারা আমাদের দিয়েছিল।  কিছুদিনের মধ্যেই দেখা গেল, লক্ষ লক্ষ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর কাছে গুগল হয়ে উঠেছে ‘কানার লাঠি’-র মতো। এই অবস্থায় গুগলের বিনিয়োগকারীরা ল্যারি-সের্গেইয়ের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে লাগল এটাকে আরো বেশি অর্থকরী করে তোলার জন্য। ওনারা দেখলেন, গুগল থেকে বিপুল টাকা কামানোর যদি কোনো তড়িৎ উপায় না-পাওয়া যায়; তাহলে এত এত ব্যবহারকারী, এত ব্যবস্থাপনা, এত বিনিয়োগ সবকিছুর বোঝা নিয়ে গুগলের ভরাডুবি রক্ষা করা যাবে না। চিন্তায় ঘুম হারাম হয়ে গেল দুইজনের।  সমান্তরালে আরেকটা ঘটনা ঘটে যা আমাদের ইন্টারনেট...

মার্ক্সবাদী নন্দনতত্ত্ব

ভূমিকা - স্টেফান মোরাভস্কি: উৎস হলো মার্কস এবং এঙ্গেলসের সাহিত্য ও শিল্পকর্ম বিষয়ক লেখালেখি - তাদের নান্দনিক চিন্তা ১৮৪২ সালের শেষের দিকে তাদের লেখায় খুঁজে পাওয়া যায় - মূল উৎস: মার্কস এবং এঙ্গেলসের ইউজেন সুয়ের উপন্যাস এবং ফার্দিনান্দ লাসালের নাটক সিকিনজেন সম্পর্কে লেখালেখি - মূল থিম: শিল্পের কার্যকরী দিক - শিল্পী এবং তাদের কাজের উপর বিচ্ছিন্নতার প্রভাব, বাস্তবতার সমস্যা (অর্থাৎ, শিল্পকে মতাদর্শ হিসেবে দেখা), প্রবণতা লেখালেখি, এবং শিল্পের শ্রেণী সংযোগ বাস্তবতার সমস্যা - শিল্প বাস্তবে কী করে? মার্কসবাদী পদ্ধতি - নান্দনিক ঘটনা সামাজিক অর্থনৈতিক প্রক্রিয়ার সাথে সম্পর্কিত হয়ে অধ্যয়ন করা হয়; ভিত্তি-অবকাঠামো মডেল; দ্বিমুখী সম্পর্ক ভিত্তি - অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপ অবকাঠামো - রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক ক্রিয়াকলাপ যা সরাসরি অর্থনীতির সাথে জড়িত নয় অর্থডক্স মার্কসবাদী বলে যে ভিত্তি অবকাঠামোর উপর আধিপত্য করে: যারা উৎপাদনের মাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করে তারা প্রকাশের মাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করে সূক্ষ্ম পরিবর্তন: পারস্পরিক সংবিধান বলে যে এই দুটি একে অপরকে প্রভাবিত করে আলথুসার বলে যে তারা অপেক্ষাকৃত স্বায়ত্তশাসি...

ইফরিত ২

বাংলাদেশে করোনায় মৃত্যুর প্রথম যে কেসটা, তার ঠিক এক সপ্তাহ আগে, আমরা ভূত ধরতে গাজীপুরের ওই রিসোর্টে যাই। চারশ বছর বয়সী এক দরবেশের ভূত। শুধু ধরতে না, ধরতে এবং সেই অভিযানের উপর ছবি বানাতে। যে রিসোর্টের কথা বলছি সেটা মালিকানা বদলে গত বছর থেকে আবার পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত হয়েছে; যে কারণে তার নামটা আমি প্রকাশ করতে পারছি না। রিসোর্টের বর্তমান সত্ত্বাধিকারী(গণ) আমাকে স্পষ্ট ভাষায় সতর্ক করেছেন: আকারে-ইঙ্গিতেও ওই রিসোর্টের পরিচয় প্রকাশ পেলে তারা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।  ওই অভিশপ্ত জায়গার কবল থেকে আমরা যারা মুক্তি পেয়েছি তারা নিজেদের প্রাণ রাখতে পেরেই সন্তুষ্ট। সেই আতঙ্কদায়ী অতীতকে আরো বেশি নাড়াচাড়া করে আরো বেশি জটিলতায়—বিশেষত আইনি জটিলতায়—পড়ার ইচ্ছা কারো নাই। কিন্তু আমাদের বায়োস্কোপ-ওঝা-অভিযাত্রী দলে একজন লেখক ছিল, আমি শ্রীমান। আর, লেখকদের সহজাত এক অভিশাপ থাকে: নিজেকে ব্যক্ত করার তাড়না। ফলে আমি যা দেখেছি, শুনেছি, অনুভব করেছি তাকে টাইপ না-করে থাকতে পারিনি। এরপর কয়েক দফা ইমেইল চালাচালি, এক দফা উকিল নোটিশ ও হলফনামা বিনিময়ের মাঝে কেটে যায় অনেকগুলো বছর। বহুদিন ফেলে রেখে, বহু শর্তসাপেক্ষে, বহু...