সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

What is Digital Colonialism?

এই আলোচনায় আমি কলোনিয়ালিজমের বাংলা পরিভাষা হিসেবে দখলদারিত্ব কথাটাকে ব্যবহার করছি। দখলদারিত্ব বলতে সেইসব নীতি ও চর্চাকে বোঝাচ্ছি যার দ্বারা এক দেশের উপর আরেক দেশের আংশিক বা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা পায়। এর একটি বড় পরিণাম হলো দখলদার দেশ কর্তৃক দখলকৃত অঞ্চলের অর্থনৈতিক শোষণ। ধ্রুপদী দখলদারিত্বের যুগে ঔপনিবেশিক দস্যুবৃত্তির চালিকা শক্তি ছিল বেনিয়া পুঁজি। সেই উপনিবাসীদের নজিরবিহীন লুটতরাজের প্রত্যক্ষ সুফল হয়েই আসে প্রথম শিল্প বিপ্লব। যা ছিল বৃহৎ পুঁজিবাদী বিপ্লবের একটি অংশ। পুঁজিবাদী বিপ্লব থেকে উদ্বৃত্ত হওয়া পুঁজ বা পুঁজি পরবর্তীতে শোষণের চাকা ঘূর্ণায়মান রাখতে সাহায্য করেছে। অর্থাৎ শোষণ থেকে আরো শোষণ, পুঁজি থেকে আরো পুঁজি।      পণ্ডিতরা বলতে চান, আজকের দিনে নতুন খোলসে সেই একই দখলদারিত্বের হাতিয়ার হয়েছে যাবতীয় ডিজিটাল মাধ্যম। এই নবরূপী দখলদারিত্বর নাম ডাটা কলোনিয়ালিজম বা ডিজিটাল কলোনিয়ালিজম। কর্পোরেট দখলদারিত্বের এ অন্যতম চেহারা। যার পরিণাম হয়ে এসেছে সর্বব্যাপী নজদারির পুঁজিতন্ত্র । এই নজরদারির কাজ তারা স্বদেশ আর কথিত তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোয় সমান উৎসাহ নিয়েই করে ...

চিত্তশুদ্ধি

[২০১২ সালে প্রকাশিত "ভূতলোজি কিংবা চিত্তশুদ্ধি" বই থেকে] চায়ের কাপে চুমুক দিতেই মেজর রাশেদের জিহ্বা পুড়ে গেল। আহ! চায়ের কাপ নামিয়ে রাখলেন। এ ব্যাপারটি নিশ্চিত যে, জিহ্বা পুড়ে যাওয়া অন্যমনস্কতারই কুফল। চায়ের কাপ নামিয়ে রেখেও মেজর ভ্রূ কুঁচকে রইলেন। ক্যান্টিনের চোদ্দ-পনরো বছরের কাজের ছেলেটি তাকে অনেকক্ষণ ধরে লক্ষ্য করছে। বাঙালি এ অফিসারকে ছেলেটি অধিকাংশ সময় আমোদ-প্রমোদে মগ্ন থাকতে দেখেছে। আজকে মেজরের এমন অন্যমনস্কতার কারণ সে কিছুটা হলেও আঁচ করতে পারে। সে শুনেছে, পূর্ব- পাকিস্তানে গোপনে আর্মি ঢোকান হচ্ছে। মেজর কোন না কোনভাবে তা জেনে গেছেন। সুতরাং, স্বাভাবিকভাবেই তিনি এর বিরুদ্ধে এবং এটা নিয়ে চিন্তিত। "স্যার, চা ঠাণ্ডা হয়ে যাচ্ছে" ছেলেটা এগিয়ে এল। "কি? ও আচ্ছা।" মেজর আবার ভাবনায় নিমজ্জিত হলেন। এমন সময় ক্যান্টিনের ভেতর ধুপধাপ শব্দ তুলে দু'জন সশস্ত্র জোয়ান ঢুকল। এরপর মেজর রাশেদের টেবিলের কাছে গিয়ে তাকে স্যালুট করল। মেজর ওদের দিকে কপাল কুঁচকে তাকালেন। তাদের একজন একধাপ এগিয়ে এসে জানাল: "স্যার, কমান্ডার সাব আক্কো হেড কোয়ার্টার বুলায়া" "...

কাজের বুয়া সুফিয়া

দিন ২৮০ ফ্ল্যাট মালিক সমিতির সভামধ্যে সুফিয়া কাঁদতে কাঁদতে বলল, আপনাদের জন্য দিন-নাই রাত-নাই জন্তু জানোয়ারের মতো খাটাখাটনি করে শরিলের রক্ত পানি করতেসি। তাও আপনাদের কারো কারো চক্ষের বিষ হইলাম। আমি রাতে ঘুমাই না। লতিফরে জিগান, রাত জাইগা তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে আপনাদের জন্য দোয়া করি। আর আপনাদের ভাবে মনে হয় যেন আমি আপনাদের শত্রু। মনে হয়, ওই চুন্নীটাই আপনাদের জন্য ভালো ছিল।’ এই পর্যন্ত বলে সে একটু থামে। সভার মধ্যে নীরবতা। দেখতে দেখতে সন্ধ্যা আরেকটু ঘনালো। বুলবুল জিলানি বা কেউ একজন ছাদের সব বাতি জ্বেলে দেয়। আমরা জানি, এখন সুফিয়া তার বাবার কথা বলা শুরু করবে। বলবে, এই বাড়ি তোলার সময় কীভাবে ঠিকাদারি নিয়ে মারামারি করে তার মহান পিতা প্রাণ হারিয়েছে। তারপর, পৃথিবীতে আমরা ছাড়া তার কেউ নাই এই বলে পরের দফা বিশ্রীভাবে কাঁদতে শুরু করবে। সভাপতি বদরে আলির বউ মিসেস বদরে আলি জান্নাতারা সেই কান্না দেখে একটু পরপর আঁচলে চোখ মুছবেন। আমরা যারা সুফিয়াকে সহ্য করতে পারি না, সুফিয়ার কান্নাও আমাদের কানে অসহনীয় ঠেকে। উঠে যেতে পারি না, জিলানিরা পাহারা বসিয়ে রেখেছে। ছাদের দরজায় দাঁড়িয়ে সিগারেট ফুঁকছে সাদ্দাম। হয় এখন যেতে ...