সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

2017 থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

48 LAWS OF POWER by Robert Greene and Joost Elffers

Vladimir Putin The definition of power in 21st century

বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি : প্রাচীন অর্বাচীন তর্ক

এই লেখাটা ২০১৪ সালে প্রকাশিত হয় যোসেফাইট কালচারাল ফোরামের বার্ষিক ক্রোড়পত্র ত্রিলয়-এ। আমি তখন সেন্ট যোসেফ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণির ছাত্র প্রাচীন -  ওই অর্বাচীনদের আমি শতবার সতর্ক করেছি, আর যা-ই করো, আত্মপরিচয় কখনো হারাবে না। স্পষ্টই দেখতে পাচ্ছি এদের সামনে যেন ঘোর অন্ধকার। নিজেদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি সবকিছু ভুলে গিয়ে এরা আজ পাশ্চাত্যের অনুকরণে ব্যস্ত। নিজের চশমার 'স্টাইল'টা যতই বাজে হোক না কেন ওটা পরেই তুমি স্বচ্ছ দেখবে। তা না করে যদি অন্যের চশমা চোখে দাও, তোমাকে মানাবে হয়তো ভালো কিন্তু হোঁচট খেতে হবে পদে পদে। অর্বাচীন - তোমার কথায় কেমন যেন ছাপাখানার গন্ধ। তোমার বয়স হয়েছে। তাই চোখে সমস্যা। চোখের পাতা বন্ধ করে তুমি অতীতটাকে সোনালি রঙের মনে করো। আর চোখ মেলে ভবিষ্যৎ দেখতে গেলেই তোমার মনে হয় সেটা বুঝি অন্ধকার। অর্বাচীনদের যতই গালি দাও।পশ্চিমা চিকিৎসার সাহায্য নিয়েই দেখো না চোখটা ভালো হয় কি না। প্রাচীন - বাবা! আজকালকার ছেলেমেয়েরা এক কথার পিঠে একশ কথাকে চাপায়। আমাদের যুগে বড়রা বলত। ছোটরা শুনত। তার থেকেই শিক্ষা নিত। এখনকার ছেলেমেয়দের কথা ...

একটি খসড়া গল্প : শেষ পর্ব

তোমার হৃদয়ে জমা অন্ধকার তোমাকে তাড়া করছে মাইন্ড গেম ... আস্তে আস্তে মাথার কুয়াশা পরিষ্কার হতে লাগল... এই মেঘলাকে মনে মনে কী ভালোটাই না বেসেছি, অথচ এখন, ওর দিকে তাকাতেও ভয় পাচ্ছি। আমি কি কখনো আনন্দের সৃজন করিনি? সুরের জন্ম দেইনি?  সবই কি ভয়ঙ্কর, সবই কি অসুর? 'তোমার দুর্ভাগ্য - মেঘলা কোলের বিড়ালটাকে নামিয়ে রাখল, কালো দিকটাই তোমকে তাড়া করছে। তোমার হৃদয়ে জমে থাকা অন্ধকারও এর জন্য দায়ী।' 'অন্ধকার! আমার হৃদয়ে!' 'হ্যা অন্ধকার। তুমি অহংকারী, দুর্বল আর স্বেচ্ছাচারী। ওই ট্রাকের তলে চাপা পড়া লোকটাকে দেখ। কিংবা ওইদিকে যে বুড়ো লোকটা কেনার জন্য লাশ খুঁজছে। এদের বেহাল দশার জন্য তুমিই তো দায়ী।' 'তুমি এভাবে বলতে পারো না - উত্তেজিত হয়ে বললাম, লেখক কেবল নিয়তিকেই অনুসরণ করে। নিয়তি যাকে যে পথে চালায় আমরা সেটাই মলাটবন্দী করি।' মেঘলা হাসল, এসব কোথা থেকে শুনেছ? নাকি বানিয়েছ নিজে নিজে? আমার কী ধারণা জানো? তুমি আসলে দুর্বল আর অসহায় একটা বাচ্চা। সত্যিকার জগতে তুমি ক্ষমতাহীন। কিন্তু যেতাকে তুমি নিজের জগৎ বলে দাবি করছ সেখানে আচ্ছামত ক্ষমতার প্র...

একটি খসড়া গল্প : প্রথম পর্ব

কয়তলায় যাবেন? আমার নাম মেঘলা ...অজান্তেই বাস্তবের মানুষগুলো লেখার ভেতরে ঢুকে পড়ে... এমন সময় কলিং বেল বাজল। একটানা অনেকক্ষণ। আমার তখন পাগলপ্রায় অবস্থা। চিন্তার মধ্যে হারিয়ে গিয়েছিলাম। একা বাসায় একটা খ্যাপা গল্প নিয়ে কাজ করছিলাম। তখনি কেউ বেল বাজাল। নাহলে হয়তো আমার পাগল হওয়া আর ঠেকান যেত না। টেবিল ছেড়ে গিয়ে দরজা খুলে বাইরে উঁকি দিলাম। একটা মেয়ে। মেয়ে কি মহিলা তা বলা শক্ত। দেখে তো পরিচিত বলেই মনে হলো। কোথায় দেখেছি এই মুহুর্তে মনে করতে পারলাম না। আমার মায়ের কোনো ছাত্রী? 'কয়তলায় যাবেন?' দরজাটা সামান্য একটু ফাঁক করেছি। শরীর দরজার আড়ালে। কেননা আমার পরনে কেবল একটা হাফ প্যান্ট। মেয়েটা একটু ইততস্ত করে বলল, এটা কি বিক্রমাদিত্যর বাসা? দরজা পুরো না খুলেই উপরে নিচে মাথা নাড়লাম।  'উনি কি আছেন?' আমাকে কেন চাইছে মেয়েটা বুঝতে পারলাম না। চেহারটা এখনো মেলাতে পারছিনা। তবে দরজা পুরোপুরি খুলে আত্মপ্রকাশ করলাম। জানালাম আমিই সেই অধম - ভেতরে আসুন, প্লিজ। 'ইয়ে তুমি... আপনি বিক্রমাদিত্য?' মেয়েটা আমার ওপর দৃষ্টি স্থির রেখে ঘরে ঢুকল। আধা ন্যাংটো অবস্থায় আমাকে দেখ...

উড়ো চর্চা ১

বইয়ের বাইরেও যে সত্য আছে বিলক্ষণ জানতাম। আর আমার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল বইয়ের ভিতরেই তাকে পাওয়া যায়। আলজেবরা দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায়না এমন কিছুর অস্তিত্ব মানতে পারতাম না। সাহিত্যের দিকে ঝোঁক ছিল। অন্যের সৃষ্টিতে মুগ্ধ হতাম আর নিজেও সাহিত্যসৃজনের অনুরুপ চেষ্টা চালাতাম। এই সাহিত্যচর্চা করতে গিয়েই প্রথম একদিন ধন্ধে পড়েছিলাম ব্যাপারটা নিয়ে। আচ্ছা মুসিবত, 'কে-কী-কেন' এই প্রশ্নের উত্তর মেলাতে পারছিলাম না। তারপর একদিন... বইয়ের ফাঁকে, নিজের লেখার ভিতর মাঝে মধ্যেই যাকে খুঁজেছি বিনা বলে-কয়ে  সেই ব্যাখ্যাতীত সত্যটাই এসে হাজির হলো। অনভ্যস্ত হাতে শাড়ি পরে, চুড়ির রিন ঝিন শব্দ তুলে, একেবারে আমার লেখার টেবিলের সামনে।  ভাগ্য বিধাতার অগ্র-পশ্চাৎহীন বিবেচনায় (বরাবরই বিধি আমার সাথে এরকম আমোদে মাতেন) তার আসাটা আমি সেভাবে টেরই পেয়েছিলাম না অথচ চলে যাওয়াটা খুব বেশি করে নজরে এল। দেবীকে সাক্ষাৎ পেয়েও আমি উজবুক মঙ্গলকাব্যে মুখ ডুবিয়ে বসেছিলাম। অবহেলায় দেবী যখন ফিরে গেল তখন মুখ তুলে চাইলাম। দূরে যাওয়াতে বাঁধনে টান পড়ল আর সেই প্রথম টের পেলাম যে অজান্তে কবে বাঁধা পড়েছিলাম। জন্ম লাজুক- তাই 'ফি...

অপ্রকাশিত গল্প

ছেলে চাকরি জুটিয়েছে। এই বেলা বউও জুটিয়ে ফেলা চাই। পাত্রী ফাহাদের নিজের পছন্দ করা। আর আঙ্কেল-আন্টিও চাচ্ছেন ছেলে বিয়ে-থা করে সংসার পাতুক। বিপত্তি কেবল এক জায়গাতেই। পাত্রীকে ফাহাদ এখনো নিজের পছন্দের কথা বলে উঠতে পারেনি। পছন্দের কথা কেন, কোনো ধরনের কোনো কথা বলার সুযোগই বেচারার কাছে এখনো আসেনি। অতঃপর ছেলে আমার শরণাপন্ন হলো। আলাপ করিয়ে দিতে হবে দুজনার।          এইবার আমার ইতিহাস বলি। ইতিহাস অতি সংক্ষিপ্ত। আমি মোড়ের কোচিং সেন্টারে ইতিহাস পড়াই। কোচিং সেন্টারের পরিচালক আমাদের স্কুল বেলাকার শিক্ষক মীরজাফর স্যার। ছাত্রদের ওপর রাগলে উনি নির্বাক হয়ে তার দিকে কটমটিয়ে তাকিয়ে থাকতেন। কদাচিৎ ডান কবজির ওপর বাম হাত রেখে জবাই করার ভঙ্গি করতেন। সেই হতে তার অপর নাম কসাই স্যার। রিটায়ারমেন্টের আর বাকি পাঁচ বছর। অবসর জীবনটাও পড়িয়ে পার করবেন বলে এখানে ‘বিজ্ঞান ইনস্টিটিউশন’ নামের কোচিং সেন্টার খুলেছেন। যেখানে “বিজ্ঞানসহ সকল বিষয় যত্নসহকারে"পড়ান হয়। অঙ্ক-বিজ্ঞান স্যার নিজে পড়ান। বাকিটা সময় প্রবেশদ্বারে ধামড়া ডেস্কটায় বসে থাকেন। যদিও এখন এক অর্থে আমি ওনার সহকর্মী, তবু...

স্বর্গচূড়া

অবশেষে, একদিন, এতবছরের অপেক্ষার পর ট্রেনটা পেলাম আমি। সঙ্গের পোটলা-পুটলিগুলো প্রথমে কামরার ভেতর ছুঁড়ে দিলাম। তারপর নিজের নাম মুখে নিয়ে ঝাঁপিয়ে উঠলাম ট্রেনে। গাড়িটা এক মুহূর্ত থামে না প্লাটফর্মে। জোর গতিতে ছুটে চলে। কারো জন্য অপেক্ষা করতে নারাজ। একজনের জীবনে একবার বই দু’বার কখনো আসে না। পাল্লা দিয়ে ছুটে তাকে ধরতে হয়। নইলে নাই। অন্য গাড়ি ধরতে হবে। কিন্তু সে গাড়ি যাবে আরেক গন্তব্যে। ট্রেনের দরজা দিয়ে বাইরে উঁকি দিলাম। প্লাটফর্মে সাথীকে দেখতে পাই। হাত নেড়ে বিদায় জানাচ্ছে অথচ ঠোঁটে হাসি নাই। শুনতে পেলাম মনে মনে কেবল বলছে, তোমার যাত্রা শুভ হোক। (২) প্রথম কবে সাথীর দেখা পেয়েছিলাম ভালো মনে পড়ে না। মনে পড়ে, মন খারাপ করে প্লাটফর্মে বসে ছিলাম। সাথীকে পেয়ে মন ভালো হয়ে গিয়েছিল। কেন, তা মনে নাই। এরপর কত দিন, কত রাত পাশাপাশি বসে কেটে গেল। আমি আর সাথী। স্টেশন জুড়ে এত এত মুখ। কাউকে মনে ধরে নি। সাথী বাদে। সাথীর স্বজনরা একই স্টেশনে ছিল। তবু ও ছিল একা। কী জানি কেন, কখনো জিগ্যেস করা হয় নি। কিন্তু সাথী অনেক প্রশ্ন করত আমাকে। খুব অবাক হতো যে অন্যদের মতো আমার শরীরে কেন বাঁধন নাই। আমার মা-বাবার কথা জিগ...