অবশেষে, একদিন, এতবছরের অপেক্ষার পর ট্রেনটা পেলাম আমি। সঙ্গের পোটলা-পুটলিগুলো প্রথমে কামরার ভেতর ছুঁড়ে দিলাম। তারপর নিজের নাম মুখে নিয়ে ঝাঁপিয়ে উঠলাম ট্রেনে। গাড়িটা এক মুহূর্ত থামে না প্লাটফর্মে। জোর গতিতে ছুটে চলে। কারো জন্য অপেক্ষা করতে নারাজ। একজনের জীবনে একবার বই দু’বার কখনো আসে না। পাল্লা দিয়ে ছুটে তাকে ধরতে হয়। নইলে নাই। অন্য গাড়ি ধরতে হবে। কিন্তু সে গাড়ি যাবে আরেক গন্তব্যে। ট্রেনের দরজা দিয়ে বাইরে উঁকি দিলাম। প্লাটফর্মে সাথীকে দেখতে পাই। হাত নেড়ে বিদায় জানাচ্ছে অথচ ঠোঁটে হাসি নাই। শুনতে পেলাম মনে মনে কেবল বলছে, তোমার যাত্রা শুভ হোক।
(২)
প্রথম কবে সাথীর দেখা পেয়েছিলাম ভালো মনে পড়ে না। মনে পড়ে, মন খারাপ করে প্লাটফর্মে বসে ছিলাম। সাথীকে পেয়ে মন ভালো হয়ে গিয়েছিল। কেন, তা মনে নাই। এরপর কত দিন, কত রাত পাশাপাশি বসে কেটে গেল। আমি আর সাথী। স্টেশন জুড়ে এত এত মুখ। কাউকে মনে ধরে নি। সাথী বাদে। সাথীর স্বজনরা একই স্টেশনে ছিল। তবু ও ছিল একা। কী জানি কেন, কখনো জিগ্যেস করা হয় নি। কিন্তু সাথী অনেক প্রশ্ন করত আমাকে। খুব অবাক হতো যে অন্যদের মতো আমার শরীরে কেন বাঁধন নাই। আমার মা-বাবার কথা জিগ্যেস করত। বলতাম, আমি জানি না। ওদের ছেড়ে এসেছি অনেক দূরের স্টেশনে।
- ভাইবোন?
- তাও জানি না। ওদের গন্তব্য যে আলাদা।
- বন্ধু-বান্ধব? কেউ নাই তোমার সাথে?
- না প্রিয় সাথী, কেউ নাই। তাই বলে তুমি করুণা কোর না আমার প্রতি। করুণা আমার ভালো লাগে না।
সাথী তখন আমার গন্তব্যের কথা জানতে চাইত। বিশ্বাস করতে পারত না রেলগাড়ি চড়েও স্বর্গে যাওয়া সম্ভব। আবার প্রার্থনাও করত আমার জন্য, আমি যেন গন্তব্যে পৌছাঁতে পারি। মাঝে মাঝে ওর মনেও অন্য সকলের মতোই সন্দেহ জাগত- ওই খাঁড়াই বেয়ে অমরলোকে কীভাবে উঠবে তোমার গাড়ি? পড়ে যাবে না?
- পড়বে না। সেজন্যই তো তার এত গতি। সাঁ করে উঠে যায় খাড়াই বেয়ে। বাতাসেরও আগে পৌঁছে যায় স্বর্গের চূড়ায়। পথে খুব ঝাঁকুনি খায়। অনেকে থাকতে না পেরে ছিটকে পড়ে যায় নিচে।
- হায় সেতো বিপজ্জ্বনক!
- তা তো বটেই। তখন অন্য গাড়ি ধরতে হয়। কেউ পারে। কেউ পারে না।
- তবু তুমি যাবে?
- যেতে হবে। চুড়ায় গিয়ে জমা হয়েছে আমার সমস্ত স্বপ্ন। ওখানে না পৌঁছালে যে আমি স্বপ্নের দেখা পাব না কোনদিন। যত ঝুঁকি থাকুক, ওটাই আমার একমাত্র গন্তব্য।
(৩)
ট্রেনটাকে আসতেই হবে জানতাম। কবে আসবে তা জানতাম না। যেকোন দিন, যেকোন সময় আসতে পারে। সর্বক্ষণ তৈরি থাকতাম। সে এক দীর্ঘ, কখনো উত্তেজনাকর, কখনো বা ক্লান্তিকর অপেক্ষা। সাথী এক মুহূর্তের জন্যও সরত না পাশ থেকে। অপেক্ষার দিনগুলোতে ওই ছিল আমার সুর। আমার স্বপ্নগুলো যেন অকালে মরে না যায় সে জন্য সাথীই ছিল আমার একমাত্র অবলম্বন। আর সবাইকে তো ছেড়েই এসেছিলাম।
কখনোই তাল কাটত না আমাদের। অবশ্য যদি না আমার সাথী আমার বোঁচকায় হাত দিত। বোঁচকাগুলো কিছুতেই খুলতে দিতাম না ওকে। একদিন এ নিয়ে অভিমান করে কাঁদতে লাগল। বলল, তুমি কিছুই ভাগাভাগি করতে পার না আমার সাথে। তুমি বড় স্বার্থপর। কই, আমি তো কিছুই গোপন রাখি নি তোমার কাছে!
আমি ওকে বুঝিয়ে বললাম যে, আমার বোঁচকার মালামাল কোনই কাজে আসবে না ওর। ভেতরে কী আছে ওর তা না জানাই ভালো।
- কী এমন জিনিস নিয়ে যাচ্ছ তুমি? কাউকে দেখতে দাও না। কী এমন জিনিস যা কারোই কাজে আসে না অথচ রাতদিন আগলে রেখেছ?
- এই বড় ছাই রঙা বোঁচকা দেখছ, ওখানে আমার সমস্ত ব্যার্থতা। মাঝারিটা ব্যথায় ভরা। পিঠে যেটা দেখছ, সেখানে আছে হারানর কষ্ট। মুখ খুলে দিলে এরা কথা বলে। এগুলো আমার পথের পুঁজি। এদের সঙ্গী করেই আমি চূঁড়ায় উঠব। ওখানে তো আনন্দ আছেই। এগুলোরও চড়া দাম জানো? সেজন্যই জমিয়ে রেখেছি, আগেভাগে কাউকে দিচ্ছি না। তুমি রাগ কোর না সাথী, তোমার নেবার নয় বলেই দিচ্ছি না। তুমি কেন মিছে এগুলোর ভাগী হবে? আর এগুলো তো আমি ইচ্ছা করেই বয়ে বেড়াচ্ছি। মানুষ কাঁদতে ভালোবাসে। কেঁদে সুখ পায়। আমার জীবন থেকেই যদি সমস্ত কান্না মুছে যায়, ওদের কাঁদাব কী করে?
সাথীকে চুপ করে থাকতে দেখে বললাম, দ্যাখো, জীবন ভর মুঠো মুঠো শূন্যতা জমা করেছিলাম আমি। তুমি আসায় সব একাকিত্ব কোথায় মিলিয়ে গেল। কতখানি ক্ষতি করলে তুমি আমার বল তো।
সাথী হাসল। আমার হাত মুঠোয় চেপে বলল, যখন চূড়ায় পৌঁছাবে তুমি, মনে থাকবে তো আমাকে?
- কেন নয়? তুমিই তো আমার দীর্ঘ অপেক্ষার শেষ সঙ্গী। গন্তব্যে যদি একবার পৌঁছাতে পারি, ভুরি ভুরি উপহার পাঠাব মর্ত্যবাসীর জন্য। তোমাকে উপলক্ষ করে। দেখো ভালো লাগবে। আর, যদি না পৌঁছাতে পারি, যদি কখনো পড়ে যাই চূড়া থেকে, যেমনটা অনেকেরই হয়, তোমাকে কি ফিরে পাব?
মিথ্যা আশ্বাস দিল না সাথী। ওর সেদিনকার দীর্ঘশ্বাস আজও আমার অনেক বড় পুঁজি।
(৪)
একটা ব্যাপারে ভয় ছিল সাথীর। আমিও যে সে নিয়ে খুব একটা নিরুদ্বিগ্ন ছিলাম তা নয়। ও বলত, যদি তোমার আগেই চলে আসে আমার ট্রেন, আমার বোনেরা যদি উঠে পড়ে গাড়িতে, যদি আমাকে ডাকে, কী হবে তখন?
- কী হবে? তুমি চলে যেও। আমাদের প্লাটফর্ম এক। গন্তব্য তো আলাদা। ট্রেন তো আলাদা।
সাথী কেঁদে বলত, কক্ষনো তোমাকে ছেড়ে যাব না আমি। তুমি উঠে এসো আমার ট্রেনে। পারবে না? আমরা একসাথে যাব। গন্তব্য যাই হোক।
- তা হয় না। তোমাদের ট্রেন যে বড় ধীর গতির। তোমাদের যাত্রা বড় একঘেয়ে। রোজ একই জায়গায় থামা। একই কাজ। আর শুধু বসে থাকলেই তো চলে না। আমরা একসময় বড় হব। তুমি আর আমি কি সারাটা জীবন পাশাপাশি সিটে গল্প করে কাটিয়ে দিব? অনেক দায়িত্ব আছে। কিন্তু আমি নিজেকে সেভাবে তৈরি করিনি। সে জীবন আমার নয়। আমার জন্য অপেক্ষা করে আছে আরো বড় কিছু।
- তুমি ভেবো না প্রিয়, আমি তোমাকে ছেড়ে কখনো ট্রেনে উঠব না।
(৫)
সময় কাটানর জন্য আমাকেও মাঝে মাঝে গল্প করতে হোত। আমার স্বপ্নের রাজ্যে পৌঁছানর গল্প। যেখানে পৌঁছাতে পারলে যাত্রার ক্লান্তি, বিচ্ছেদের কষ্ট সবকিছু মানুষ ভুলে যায়। সেখানে মৃত্যু নাই। একবার যদি চূড়ায় উঠি, যদি স্বপ্নের দেখা পাই, জীবন সার্থক হবে।
- সবাইকে ছেড়ে যেতে কষ্ট হবে না?
- কষ্ট তো এখনো হয়। কী করব বল সাথী। আমি যেখানে যাচ্ছি সেখানে একলাই যেতে হয়। ট্রেনটা একাই ধরতে হয়। কেউ যাবে না সাথে। কাউকে নেয়া যাবে না। না মা-বাবা, না বন্ধুরা, না কোনো ছেলে, না কোনো মেয়ে।
- পারবে তুমি? সঙ্গে নাও না আমাকে!
আমি খুশিতে দাঁড়িয়ে পড়ি - 'সত্যি যাবে তুমি?' পরক্ষণেই বলি, অসম্ভব।'
- কেন নয়?
- ছুটতে পারবে না। রেলগাড়ি খুব দ্রুত ছোটে। তুমি দক্ষ নও। দৌঁড়ে ধরতে পারবে না।
- হায়, তবে তুমিও যেও না।
কিন্তু কোন বিকল্প ছিল না সামনে। আমার আবাল্য ধ্যান-জ্ঞান কীভাবে উঠব চূড়ায়, কবে যাব অমৃতলোকে। যেন আমার জন্মই হয়েছিল ওখানে যাব বলে। ওই গন্তব্য ছাড়া আমি আজও কিছুই বঝি না। দিন-রাত অশেষ পরিশ্রমের একটাই উদ্দেশ্য ছিল – আমি আকাশের সীমানা ঘেঁষে আপনার এক রাজ্য তৈরি করব। এ মহাকালের ডাক। তাকে আমি অস্বীকার করতে পারি না। ওখানেই আমার সব স্বপ্ন। স্বপ্নহীন মানুষ বাঁচে না। আমি আমরণ বাঁচার সুখ চেয়েছিলাম।
(৬)
সাথীর ট্রেন এল না তখনো। ওর বয়সী অন্যান্যদের মতোই ওকে আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। বেশ ক’বার গাড়ি বদল, স্টেশন বদল করে তারপর পাবে ওর চূড়ান্ত গন্তব্য। সে অনেক দেরি। আমার মতো স্বর্গে যাবার তাড়া এ বয়সে কম জনেরই থাকে।
আমার ট্রেনের আমি দেখা পেলাম।
- যেয়ো না! বলে আমার হাত চেপে ধরল সাথী।
- সে কী করে সম্ভব? এখন তো আর মুখ ফেরানর উপায় নাই। চূড়ায় ওঠা ছিল আমার নেশা। এই নেশার টানে ছুটতে গিয়ে অনেক কিছু বিসর্জন দিয়ে ফেলেছি আমি। আমার আপন যারা ছিল, যা কিছু ছিল, সবাইকে ছেড়ে এসেছি। আমাকে সামনে যেতেই হবে।
- কেন? আমি তো আছি। আমি বাঁচব কীভাবে?
- আমি স্বার্থপর নই সাথী। তোমার স্বপ্ন এখনো ধরায়। তোমার সবাই আছে। আমার শরীরে কোনো বন্ধন নাই। আমি নিঃস্ব। তুমি আর আমাকে বাঁধার চেষ্টা কোর না। সময় নাই। আমার শপথ, তুমি চলে যাও। তোমার যারা আপন, তারা তোমার অপেক্ষায়।
সাথী হাত ছেড়ে দিল।
অবশেষে, একদিন, এতবছরের অপেক্ষার পর ট্রেনটা পেলাম আমি। সঙ্গের পোটলা-পুটলিগুলো প্রথমে কামরার ভেতর ছুঁড়ে দিলাম। তারপর নিজের নাম মুখে নিয়ে ঝাঁপিয়ে উঠলাম ট্রেনে। গাড়িটা এক মুহূর্ত থামে না প্লাটফর্মে। জোর গতিতে ছুটে চলে। কারো জন্য অপেক্ষা করতে নারাজ। একজনের জীবনে একবার বই দু’বার কখনো আসে না। পাল্লা দিয়ে ছুটে তাকে ধরতে হয়। নইলে নাই। অন্য গাড়ি ধরতে হবে। কিন্তু সে গাড়ি যাবে আরেক গন্তব্যে। ট্রেনের দরজা দিয়ে বাইরে উঁকি দিলাম। প্লাটফর্মে সাথীকে দেখতে পাই। হাত নেড়ে বিদায় জানাচ্ছে অথচ ঠোঁটে হাসি নাই। শুনতে পেলাম মনে মনে কেবল বলছে, তোমার যাত্রা শুভ হোক।
নিমিষের মধ্যে হাওয়া হয়ে গেল স্টেশন। রেলগাড়ি ছুটছে ঝড়ের গতিতে। জায়গায় বসতে গিয়ে শুনলাম, টিকিট!
ঘাড় ঘুরিয়ে দেখি উর্দি পরা একজন গম্ভীর মুখে হাত বাড়িয়ে আছে। অবাক হয়ে বললাম, টিকিট কেন? টিকিটের কথা তো কেউ বলে নি।
- তুমি রেলগাড়িতে চড়ে হাওয়া খাবে, টিকিট লাগবে না?
- কিন্তু টিকিট তো...
- না কাটলে এখন তার দাম দিতে হবে। তোমার সাথে যে স্বপ্নগুলো আছে দিয়ে দাও। পথে ওগুলো নেয়া বারণ।
- স্বপ্ন! আমার সমস্ত স্বপ্ন তো চূড়াতে গিয়ে আটকেছে। আমার সাথে তো নেই একটাও। সমস্ত পিছুটান কাটিয়ে এসেছি। আমি একেবারে নিঃস্ব।
- উঁহু, তা বললে তো হবে না। টাটকা নতুন স্বপ্নের ঘ্রাণ পাচ্ছি। ওটা দিয়ে দাও। তার বিনিময়ে স্বর্গে নেব।
- কখন পৌঁছাব? পৌঁছে দাম দেয়া যায় না?
- কখন পৌঁছাবে তা কে বলতে পারে বাছা। সে অনেক দিনের ব্যাপার।
- মানে? এত জোরে ছোটার পরেও দেরি হবে বলছেন?
লোকটা হেসে বলল, স্বর্গে পৌঁছানর কোনো সহজ রাস্তা তো নাই। আর গাড়িতে উঠলেই কি সেখানে যাওয়া যায়? কতজনের তো রাস্তাতেই কেটে যায় জীবন। অনেকে আত্মহত্যা করে।
- কী বলছেন আপনি!
- তোমাকে ভয় দেখানর আমার একটুও ইচ্ছা নাই। কিন্তু এমনও তো ঘটেছে। চূড়ায় পৌঁছেও কেউ কেউ আত্মঘাতী হয়। কেন হয় তা তো তুমি জানোই। এখন দাও দেখি বেঁচে থাকা স্বপ্নটুকু।
- গাড়ি থামান। আমি নামব।
- হে হে...একবার উঠে পড়লে গাড়ি আর থামে না বাছা। চুপচাপ বসে থাক। আর, নামবে কোথায়? কার জন্য নামবে?
- আমার সাথী ছিল।
- ছিল। এখন তো নাই। সবাইকে তো ছেড়ে এসেছ। তোমার জন্যই বা কে দাঁড়াবে? কে ছুটবে রেলগাড়ির সাথে পাল্লা দিয়ে? কেনই বা ছুটবে? আমি তো জানি। কেউ থাকে না। রয়ে যায় শুধু বোঁচকাগুলো।
লোকটার তর্জনী বরাবর দৃষ্টি ফেলে নজরে পড়ল, কামরার এক কোণে জীর্ণ-ক্লীষ্ট এক বৃদ্ধ জড়ো সড়ো হয়ে বসে আছে। তারই ধুসর মণিতে দেখতে পেলাম শত বছরের নিঃসঙ্গতা।
কথা না বাড়িয়ে আমি ঝাঁপ দিলাম।
(৭)
কোথায় পড়লাম জানি না। কান ঝা ঝা করছিল। দু’হাতে ডলতে ডলতে চোখ মেললাম। ধীরে ধীরে তাকালাম। বিস্তীর্ণ মাঠের এ প্রান্ত হতে ও প্রান্ত। যতদূর চোখ যায়। জানতাম, কাউকে পাব না। কেউ থাকে না। আমার যাত্রা কি তবে এখানেই শেষ হলো?
নামহীন, বহুকাল পরিত্যাক্ত এক স্টেশনে এসে পড়েছি। আমার ট্রেনটা এক রাশ ধুলো উড়িয়ে কোথায় যে চলে গেল, তাকে আর দেখলাম না। জীবনে একবার আসে যে ট্রেন তাকেও আমি হারালাম। রেলগাড়ির ঝিকঝিক মিলিয়ে যাওয়া মাত্র পুরো পৃথিবীটা স্তদ্ধ হয়ে গেল। আর ফেরা হবে না! প্লাটফর্মে ঘুণে ধরা চেয়ার। মাটির ওপর ছড়িয়ে পড়ে ধুলিকণাগুলো শান্ত হলো। দুপুরের তীব্র রোদ যেন সমস্ত কিছুর দম বন্ধ করে দিয়েছিল। নিঃসাড় প্রকৃতিতে কেবল আমারই মতো কোনো দলহারা পথহারা পাখি যেনবা এইমাত্র নিজের দুর্দশা বুঝতে পেরে পত্রহীন গাছের ডালে বুক ফাটিয়ে চিৎকার করছিল।
আর ঠিক তারই তলে, মরুদ্যানের মতো, আমার সাথী আমার জন্য দাঁড়িয়ে ছিল।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন