সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

অপ্রকাশিত গল্প

ছেলে চাকরি জুটিয়েছে। এই বেলা বউও জুটিয়ে ফেলা চাই। পাত্রী ফাহাদের নিজের পছন্দ করা। আর আঙ্কেল-আন্টিও চাচ্ছেন ছেলে বিয়ে-থা করে সংসার পাতুক। বিপত্তি কেবল এক জায়গাতেই। পাত্রীকে ফাহাদ এখনো নিজের পছন্দের কথা বলে উঠতে পারেনি। পছন্দের কথা কেন, কোনো ধরনের কোনো কথা বলার সুযোগই বেচারার কাছে এখনো আসেনি। অতঃপর ছেলে আমার শরণাপন্ন হলো। আলাপ করিয়ে দিতে হবে দুজনার।

         এইবার আমার ইতিহাস বলি। ইতিহাস অতি সংক্ষিপ্ত। আমি মোড়ের কোচিং সেন্টারে ইতিহাস পড়াই। কোচিং সেন্টারের পরিচালক আমাদের স্কুল বেলাকার শিক্ষক মীরজাফর স্যার। ছাত্রদের ওপর রাগলে উনি নির্বাক হয়ে তার দিকে কটমটিয়ে তাকিয়ে থাকতেন। কদাচিৎ ডান কবজির ওপর বাম হাত রেখে জবাই করার ভঙ্গি করতেন। সেই হতে তার অপর নাম কসাই স্যার। রিটায়ারমেন্টের আর বাকি পাঁচ বছর। অবসর জীবনটাও পড়িয়ে পার করবেন বলে এখানে ‘বিজ্ঞান ইনস্টিটিউশন’ নামের কোচিং সেন্টার খুলেছেন। যেখানে “বিজ্ঞানসহ সকল বিষয় যত্নসহকারে"পড়ান হয়। অঙ্ক-বিজ্ঞান স্যার নিজে পড়ান। বাকিটা সময় প্রবেশদ্বারে ধামড়া ডেস্কটায় বসে থাকেন। যদিও এখন এক অর্থে আমি ওনার সহকর্মী, তবু ওই অবস্থায় ওনাকে দেখলে আজও গা কেমন ছমছম করে ওঠে। সম্ভবত স্কুল জীবনে শিকড় গেড়ে বসা সেই আতঙ্ক। চেহারাখানা দেখলেই কোনো এক অসমাপ্ত বাড়ির কাজের কথা মনে পড়ে আর আপনাআপনি গলার কাছটায় হাত চলে যায়।

          স্যারের মেয়ে অহনা। বাবার কোচিংয়ে ইংরেজি পড়ায়। সেই ছোটবেলা থেকে তাকে আমরা চিনি। স্যারের কাছে দল বেঁধে যখন পড়তে আসতাম, কলা বেচার চেয়ে রথ দেখার উদ্দেশ্যই ছিল মুখ্য। কিন্তু ওইটুকুই। স্বয়ং মীর জাফর যার পিতা তার সাথে কি যেচে কথা বলা যায়! অহনাও সাক্ষাৎ ঝাঁসির রানী। বিজ্ঞান ইনস্টিটিউশনের বাঁদরগুলো মাঝে মধ্যে আমার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। অহনা হয়তো পাশের ঘরে ক্লাস নিচ্ছে। আমার ঘরে দুমদাম ঢুকে ‘সাইলেন্ট’ বলে একটা হুংকার ছাড়ে। অমনি ক্লাস ঠাণ্ডা। নিজের ঘরে ফেরার সময় এমন একটা চাহনি সে প্রতিবার উপহার দেয় যেন বাঁদরগুলোর বাঁদরামিতে আমার কোনো প্রচ্ছন্ন ইন্ধন আছে।

যাই হোক, আমার উপর একটা দায়িত্ব পড়েছে। শুধুমাত্র প্রতিদিন মুফতে বিরিয়ানি খাবার সৌজন্যে নয়; ফাহাদকে সাহায্য করছি কারণ আমি মন থেকেও চাই ফাহাদ এবার গাটছড়া বাঁধুক। কারো সাথে কেন যে ছেলেটার সম্পর্ক টেকে না কে জানে। ওর স্বভাব কিছুটা স্বেচ্ছাচারি মানলাম। একজনের সাথে সম্পর্ক করার তিন মাসের মাথায় অন্য মেয়েকে প্রেম নিবেদন করে বসে মানলাম। তা ওর মতো সুদর্শন, পয়সাওয়ালা, চটপটে ছেলে কিছুটা ছটফটে তো হবেই। তবে আমার দৃঢ় বিশ্বাস এবারের সম্পর্কটা স্থায়ী হতে বাধ্য।

কেননা অহনাকে ও ছোটবেলা থেকে পছন্দ করত জানি। কে-না করত মহল্লার মধ্যে আর স্কুলের ছাত্রদের মধ্যে! আমিও চাই অহনা ফাহাদের মতো যোগ্য কারো হাতে পড়ুক। ছেলেটার চালও ভালো, চুলোও শুনেছি বাসায় দুই-দুইটা। উভয়েই সুখী হবে।


(২)

 মীর জাফরের ডেস্ক ফাঁকা। ডান দিকে ক্লাস ফাইভের মডেল টেস্ট চলছে। ডে-শিফটের ছাত্রহীন ঘরটায় উঁকি মারলাম।

‘আব্বু বাসায় চলে গেছেন। নামাজের পর আসবেন।’ খাতায় লাল কলম চালাতে চালাতে একবারও মুখ না তুলেই কথাটা বলে অহনা।

‘না মানে... আপনার সাথে একটু কথা– ’

‘হ্যা, বলেন কী দরকার– ' তবু মুখ তুলল না।

‘একটু বসি?’

এইবার অহনা তাকাল। চোখ থেকে চশমা নামিয়ে টেবিলে রাখল, ‘আপনার বেতন তো গত সপ্তাহে দিয়ে দেয়ার কথা।’

কিন্তু দেয়া হয় নি। যাক গে, আমি বেতন-ভাতার দাবি নিয়ে এখানে আসি নাই। বেশ কয়েকবার আমতা আমতা করে ঘটনাটা বললাম। অহনার কোনো ছেলেবন্ধু নাই সে খবর আমার জানা। এক-দুই বছরের মধ্যে বিয়ে করবে না তাও জানতাম। আমিও তো আর আজই কবুল বলতে বলছি না। আমি তো দুজনে একবার দেখা করিয়ে দিতে চাই। ইঞ্জিন স্টার্ট নেয়ার সময় পিছন থেকে ধাক্কা দেয়ার ব্যাপারটা আর কি। তারপর ওরা নাহয় দুই-এক বছর প্রেম করে নিবে। আপাতত ডেট চলুক। আমি জানি ফাহাদকে ওর পছন্দ না হয়ে যাবেই না। আলাপটা হয়ে যাওয়া চাই তো!  

‘তাহলে, আপনি আপনার ফ্রেন্ডের হয়ে আমাকে প্রপোজ করছেন?’

‘অ্যাঁ? হ্যা তাই বটে – না না তা কেন হবে। আমি তো শুধু... ফাহাদ তো শুধু একবার দেখা করার সুযোগ চায় আপনার সাথে। আমার কাজ পোস্টম্যানের।’

‘দেখা করতে চায় তো সে কথা আপনার বন্ধু নিজে এসে বলছেন না কেন? আপনাকে ঘটকালি করতে হচ্ছে কেন?’

কারণ মীর জাফর। কথাটা মুখ ফসকে বলতে গিয়েও চেপে গেলাম। ছানাবড়া চোখ করে অহনার দিকে তাকিয়ে থাকলাম। ধারণা ছিল প্রস্তাবটা পাওয়া মাত্র ‘দূত অবধ্য’ প্রথা না মেনেই অহনা আমাকে কাঁচা খেয়ে ফেলবে। উনি যে তা করছেন না তাতেই আমি সন্তুষ্ট।

‘আমি পরশু ফ্রি আছি। কোথায় দেখা করতে হবে বলুন। আর হ্যা-' অহনা বলল, ডেটিংয়ের দিনে সে নিজেই যেন আসে। তার হয়ে আপনাকে যেন না পাঠিয়ে দেয়।  


(৩)

 অহনা রেস্টুরেন্টে বসেই বলল, সরি, লেট হয়ে গেল। ভালো কথা, আপনি আজকেও ওনাকে এনেছেন কেন?’

ওনাকে অর্থাৎ আমি! আমি মূলত এসেছি খাব বলে। ঘটকালির পুরস্কার স্বরূপ আমার খাওয়া পাওনা আছে। ফাহাদের আজ দুজনকে একসাথে খাওয়ানর কথা। খেয়েই আমি সরে পড়ব।

‘আসলে আপনি যদি আবার আমাকে চিনতে না পারেন সেজন্যই ওকে ...’ পুরো কথা শেষ করল না ফাহাদ। আমি এদিকে বুঝতে পারছি না, আমার কি চলে যাওয়া উচিৎ?

‘আপনাকে না চেনার কী আছে? আপনাকে ভালো করেই চিনি।’

ফাহাদ একটু হাসল। অত চমৎকার করে আমি জীবনেও হাসতে পারব না। ‘অহনা,’ গম্ভীর হয়ে ও বলে, যেন ও নিপুনভাবে জানে কখন হাসতে হবে আর কখন থামতে হবে, ‘সত্যি কথাটা বলেই ফেলি। তোমাকে কেন আজ দেখা করতে বলেছি। আমি আসলে... ছোটবেলা থেকে তোমাকে ভালোবাসি। বলব বলব করে কথাটা কোনদিন বলা হয় নাই। শেষমেশ আমার এই বন্ধুটির মাধ্যমেই তোমাকে মনের কথা বলার সুযোগ পেলাম। আসলে, তুমি ব্যাপারটা কীভাবে নাও তাই ভেবে বলি বলি করেও বলে উঠতে পারি নি।’

‘আচ্ছা? আমার তো মনে হয় আপনি একটা ভীতুর ডিম। আর সুবিধাবাদী।' অহনা খাবার অর্ডার করল।

‘এক্সকিউজ মি!’

‘আপনি খুব ভালোভাবেই জানেন আমার বাবা কেমন মানুষ। তাই নিজে ঝুকি না নিয়ে এই আব্দুলকে পাঠিয়েছেন বিপদের মধ্যে। আর আব্দুলটাও বন্ধুর জন্য নিবেদিত প্রাণ। সে গেছে বন্ধুর হয়ে ঘটকালি করতে!’

এক মিনিট, আব্দুলটা আবার কে? অহনা কি আব্দুল বলতে আমাকে বোঝাচ্ছে? ফাহাদ দেখি ঘামছে। খাবার আসতে কতক্ষণ লাগে কে জানে আমার পেট এদিকে চোঁ চোঁ করছে।

‘তুমি কী করে ভাবতে পারলে যে একদিন খাইয়েই আমাকে পটিয়ে ফেলতে পারবে? তোমার বড় গাড়ি আর দামী ঘড়ি দেখিয়ে দুনিয়ার সব মেয়েকে বাগে আনতে পারবে এমন ভাবার কোনো কারণ নাই। আমি তোমার কয় নম্বর, হ্যা?’

‘মানে?’ ফাহাদ ঢোক গেলে।

‘তুমি এর আগে আমার বান্ধবী টিনার সাথে ডেট করতা না? ওর কাছে তোমার সব কেচ্ছা শুনেছি। বলব সবার সামনে? বাদ দাও সে কথা। আমার আগে বারো জন গার্লফ্রেন্ড ছিল না তোমার? তাহলে আমি তোমার তের নম্বর হওয়ার কথা। আনলাকি থার্টিন।’

ফাহাদ কটমট করে আমার দিকে তাকাল। আমি ওকে ইশারা করে জানালাম, আমি সত্যিই এসব কিছু জানি না। তবু ফাহাদ চোখ পাকাচ্ছে দেখে বুঝলাম ও চাচ্ছে আমি যেন ওর সমর্থনে কিছু বলি। আমি কেবল মুখ খুলেছি, ‘দেখুন মিস অহনা- '

‘তুমি চুপ থাক!’

অহনা দেখি আমাকেও তুমি করে বলতে আরম্ভ করেছে। এরপর ফাহাদকে লক্ষ্য করে যা-তা বলতে লাগল। ‘মেয়েরা কি সস্তা?’ ‘আমাকে চেন না তোমার এত্ত বড় সাহস!’ ‘তোমার মতো ছেলেদেরকে...’ ইত্যাদি ইত্যাদি। ফাহাদ অনেকক্ষণ ধরে আত্মপক্ষ সমর্থনের চেষ্টা করে শেষমেশ না পারতে উঠে দাঁড়াল। হায় সর্বনাশ! আমার কপালে আজ বোধহয় আর খাওয়া নাই। বুয়াও নির্ঘাত এতক্ষণে চলে গেছে। এ মাসের শেষ সম্বল আর খরচ না করে বরং দুপুরটা না খেয়ে কাটানই ভালো। তবে এর চেয়েও দুঃখজনক কথা, আমার জীবনের প্রথম ঘটকালিটা এভাবে ব্যার্থতায় পর্যবসিত হলো! আমাকে দিয়ে সত্যিই কিছু হবে না। শোকে শোকাতুর হয়ে উঠলাম। কী ঘটল কিছুই মাথায় ঢুকছে না। এটুকু কেবল আন্দাজ করলাম আমার গুণধর বন্ধুর কোনো ভয়াবহ গুণ অহনার সামনে এসেছে। তাতেই সব ভরাডুবি।

অহনা দণ্ডায়মান ফাহাদকে ধমকাল, ‘হা করে দেখছিস কী, ভাগ!’ এক-দুজন লোক এদিকে তাকিয়ে আছে। ফাহাদ হঠাৎ আমাকে ছাড়াই সবেগে বেরিয়ে গেল রেস্তোরা থেকে। এই সেরেছে, আমাকে যে ওর গাড়ি করে ঝিগাতলা পৌঁছে দেয়ার কথা – ভুলে গেল নাকি? বন্ধুকে রেখে বন্ধু এভাবে পালায় কখনো? আমিও মানে মানে দাঁড়িয়ে পড়লাম। কী বলে বিদায় সম্ভাষণ জানাব মাথায় আসছে না। এসব কথা মীর জাফরের কানে গেলে চাকরিটা থাকে কিনা সন্দেহ।

‘অ্যাই, তুমি আবার দাঁড়ালে কেন? হ্যা হ্যা, পিছে তাকিয়ে লাভ নাই, তোমাকেই বলছি। আর কাকে বলব? বসো এখানে।’

ঘটনা কী! আমি ভয়ে ভয়ে বসলাম। এক দফা মোকদ্দমা তো হলো, আবার কেন? অহনা বলল, আমি তো ফাহাদের কথায় আসিনি এখানে। আমাকে তো ডেকেছিলে তুমি।’

বাহ, অর্থাৎ এখন সব দোষ আমি নন্দ ঘোষ ওরফে আব্দুলের।

‘ফাহাদের সাথে অতটা বাজে ব্যবহার না করলেও পারতাম। কী করব। ওকে তাড়ানর আর কোনো উপায় ছিল না। সরি।’

‘আ-আমাকে সরি বলছেন কেন?’

‘উফ- অহনা চারদিকে একবার দেখে নিল, ‘তুমি দেখি আসলেই একটা আব্দুল। বুঝতে পার না যে কেন আমি...। আচ্ছা, আরেকজনের হাতেই আমাকে গছিয়ে দিচ্ছ যখন তাহলে লাট্টুর মতো আমার বাসার চারপাশে চক্কর দিতে কেন? আর তুমি যে অন্য জায়গায় চাকরি পেয়েছ তা কি আমি জানি না? আর সেখানে যে বেতন বকেয়া রাখে না এও জানি। শোনো, এই কোচিংয়ের চাকরিটা তোমাকে ছেড়ে দিতে হবে। নইলে খাব কী দু'জন?’

এতক্ষণে আমার মুখে হাসি ফুটে উঠল। আজকে ডেটিংটা ভণ্ডুল করার পরিকল্পনা নিয়েও অহনা যে এত সময় লাগিয়ে এত সুন্দর করে সেজেছে সে তো পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে। নির্বুদ্ধি হতে পারি। নির্বোধ তো নই। ‘কিন্তু মীর জাফর-' বলেই মুখে হাত চাপা দিলাম।

‘বাবা কার? সুতরাং টেনশনটাও তাকেই করতে দাও। তুমি তোমার কাজ কর। চাকরিটা আসছে মাস থেকেই শুরু করে দাও, বুঝলা? আপাতত খিদে পেয়েছে।’

ফাহাদের অর্ডার বাতিল করা হয় নি। ওয়েটার টেবিলে খাবার লাগাল। আসছে মাস থেকে আর টাকা-পয়সার টানাটানি থাকবে না।

আজ একটু ভালোমন্দ খাওয়া তো চলেই।



মানে বোঝাতে চাইছি গল্পটা যখন লেখা সেই ২০১৬ সালে দেখতেও এমনই স্টুপিড ছিলাম

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

48 LAWS OF POWER by Robert Greene and Joost Elffers

Vladimir Putin The definition of power in 21st century

হারবার্ট স্পেনসারের 'জৈবিক সাদৃশ্যবাদ'

ইংরেজ সমাজতত্ত্ববিদ ও জীববিজ্ঞানী হারবার্ট স্পেনসারকে বলা হয় সমাজবিজ্ঞানের দ্বিতীয় জনক। তিনি 'সামাজিক ডারউইনবাদ'-এর একজন প্রচারক। স্পেনসারের বিখ্যাত 'জৈবিক সাদৃশ্যবাদ' সমাজ ও জীবকে বিশেষ সাদৃশ্যপূর্ণ বলে দাবি করে। হারবার্ট স্পেনসার (১৮২০-১৯০৩) ১। সমাজ ও জীব উভয়েই আকারে বৃদ্ধি পায়। মানবশিশু প্রাপ্তবয়স্ক হয়। মহল্লা থেকে মেট্রোপলিটন হয়, ক্ষুদ্র রাষ্ট্র থেকে সাম্রাজ্য তৈরি হয়।   ২। প্রত্যেকে আকারে যত বড় হয় উভয়ের কাঠামো জটিলতর হতে থাকে। ৩। দুই ক্ষেত্রেই, কাঠামোগত পার্থক্যের কারণে কার্যকারিতায় অনুরূপ পার্থক্য দেখা দেয়। ৪। জীবদেহ ও সমাজ উভয়েই ক্ষুদ্রতর একক দ্বারা গঠিত। জীবের যেমন কোষ রয়েছে তেমন সমাজের রয়েছে ব্যক্তি। একাধিক কোষ মিলে যেভাবে বৃহত্তর অঙ্গ গঠন করে, একইভাবে একাধিক ব্যক্তি মিলে সমাজের বিভিন্ন অংশ গঠন করে। ৫। সমাজ ও জীব উভয়ই মূলত তিন ধরনের তন্ত্র বা ব্যবস্থার ওপর টিকে থাকে। এরা হলো - বিপাক তন্ত্র (sustaining system), সংবহন তন্ত্র (distributor or circulatory system), স্নায়ু তন্ত্র (regulatory system). জীবের জন্য খাদ্য হলো এর চালিকা শক্তি, সমাজের ক্ষেত্রে যা হলো কৃ...

আমার লেখা বই

আমার সর্বশেষ উপন্যাস অধিনায়ক শাখা -  উপন্যাস প্রকাশকাল -  ফেব্রুয়ারি, ২০২০ প্রকাশক -   ভাষাচিত্র প্রচ্ছদ -  রাজীব দত্ত অধিনায়ক পড়ুন আমার প্রথম উপন্যাস রঙবাহার শাখা - উপন্যাস প্রকাশকাল - ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ প্রকাশক - ভাষাচিত্র প্রচ্ছদ -  তৌহিন হাসান রঙবাহার পড়ুন আমার দ্বিতীয় গল্পগ্রন্থ অপরূপকথা শাখা -  ছোটগল্প সংকলন প্রকাশকাল -  ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ প্রকাশক -   ভাষাচিত্র  প্রচ্ছদ - তৌহিন হাসান অপরূপকথা পড়ুন আমার প্রথম গল্পগ্রন্থ ভূতলোজি কিংবা চিত্তশুদ্ধি শাখা -  ছোটগল্প সংকলন   প্রকাশকাল -  ফেব্রুয়ারি, ২০১২ প্রকাশক -   ভাষাচিত্র  প্রচ্ছদ -  বিক্রমাদিত্য বইটি সম্পর্কে আরো জানুন বিক্রমাদিত্য's books on Goodreads রঙবাহার reviews: 1 ratings: 1 (avg rating 5.00) অধিনায়ক ...

TFP 415 WORLD CINEMA : Class Notes

Aug 14, 2023 LECTURE 2 Expressionism Reality is distorted Artist’s personal feeling From Northern Europe How did it begin? Effects of WWI  Foreign film banned Horror, insecurity, and paranoia From German romanticism  ENLIGHTENMENT ROMANTICISM Reason Emotion Progress Common good Individuality Unique potential Science and technology Rational, ordered society Nature and imagination Spontaneous, passionate life Social conventions and institutions  Resistance to social conventions and institutions First appeared in poetry and theater “The world is a laboratory” by Gottfried Benn Characteristics of german expressionist theater Distorted and exaggerated sets, props, and costumes Unease and anxiety Symbolism- character might be represented by an animal or object or a particular color Non-linear plot Confusion and disorientation Fragmented nature of the human experience The threepenny opera (1928) by bertolt brecht Characteristics of german expressionism The subjective view of the...

স্বর্গচূড়া

অবশেষে, একদিন, এতবছরের অপেক্ষার পর ট্রেনটা পেলাম আমি। সঙ্গের পোটলা-পুটলিগুলো প্রথমে কামরার ভেতর ছুঁড়ে দিলাম। তারপর নিজের নাম মুখে নিয়ে ঝাঁপিয়ে উঠলাম ট্রেনে। গাড়িটা এক মুহূর্ত থামে না প্লাটফর্মে। জোর গতিতে ছুটে চলে। কারো জন্য অপেক্ষা করতে নারাজ। একজনের জীবনে একবার বই দু’বার কখনো আসে না। পাল্লা দিয়ে ছুটে তাকে ধরতে হয়। নইলে নাই। অন্য গাড়ি ধরতে হবে। কিন্তু সে গাড়ি যাবে আরেক গন্তব্যে। ট্রেনের দরজা দিয়ে বাইরে উঁকি দিলাম। প্লাটফর্মে সাথীকে দেখতে পাই। হাত নেড়ে বিদায় জানাচ্ছে অথচ ঠোঁটে হাসি নাই। শুনতে পেলাম মনে মনে কেবল বলছে, তোমার যাত্রা শুভ হোক। (২) প্রথম কবে সাথীর দেখা পেয়েছিলাম ভালো মনে পড়ে না। মনে পড়ে, মন খারাপ করে প্লাটফর্মে বসে ছিলাম। সাথীকে পেয়ে মন ভালো হয়ে গিয়েছিল। কেন, তা মনে নাই। এরপর কত দিন, কত রাত পাশাপাশি বসে কেটে গেল। আমি আর সাথী। স্টেশন জুড়ে এত এত মুখ। কাউকে মনে ধরে নি। সাথী বাদে। সাথীর স্বজনরা একই স্টেশনে ছিল। তবু ও ছিল একা। কী জানি কেন, কখনো জিগ্যেস করা হয় নি। কিন্তু সাথী অনেক প্রশ্ন করত আমাকে। খুব অবাক হতো যে অন্যদের মতো আমার শরীরে কেন বাঁধন নাই। আমার মা-বাবার কথা জিগ...

THE ART OF SEDUCTION by Robert Greene

রবার্ট গ্রিন এখানে ‘সিডাকশন’ কথাটাকে ব্যবহার করেছেন শুধুমাত্র যৌন প্রলোভন হিসেবে নয়, বরং আরো ব্যাপক অর্থে—রাজনৈতিক, সামাজিক বা অন্যান্য ক্ষেত্রে যেই প্রলোভন প্রযোজ্য। এই প্রলোভনের নীতিগুলো জানলে নিজেকে ও নিজের সম্পর্কগুলোকে আরেকটু ভালোভাবে ঝালাই করা যাবে। সেইসাথে তাদের প্রয়োগ করা যাবে ব্যক্তিগত ও পেশাদার জীবনে।    সারকথা প্রলোভন ব্যাপারটাই মনস্তত্ত্বের খেলা, সৌন্দর্যের না। ফলে এই খেলার একজন ওস্তাদ হয়ে ওঠা যেকোন মানুষেরই আয়ত্ত্বে আছে। এমন নয় যে, একজন প্রলোভনকারী তার ক্ষমতাটাকে একবার চালু আর একবার বন্ধ করেন—প্রতিটা সামাজিক ও ব্যক্তিগত লেনদেনই তার কাছে প্রলোভনের একেকটা সুযোগ। সুযোগের একটা মুহূর্তও নষ্ট করার নাই। প্রলোভনকারীরা কখনো আত্মনিমগ্ন থাকে না। তাদের দৃষ্টি থাকে বাইরের দিকে, ভিতরের দিকে নয়।  প্লেজার বা পুলক হলো আমাদেরকে আমাদের সীমার বাইরে টেনে নিয়ে যাওয়ার অনুভূতি, উদ্বেলিত করে দেওয়ার অনুভূতি—তা হতে পারে মানুষের দ্বারা, বা কোনো ঘটনার দ্বারা।  শেষত, যারা কিনা প্রলোভনকারী, তাদের দুনিয়াদারির সাথে নৈতিকতা ব্যাপারটার সম্পর্ক একদম নাই। প্রতিটা প্রলোভনের দুইটা উপাদান থাকে...

মিডিয়া সাক্ষরতা : আদিপর্ব

মিডিয়া সাক্ষরতা ও এ সংক্রান্ত যাবতীয় জিজ্ঞাসা - মিডিয়া নিজে যতটা প্রাচীন তার চেয়ে কম পুরনো নয়। বর্তমানে তথ্য ও তথ্যপ্রযুক্তির সহজলভ্যতা মিডিয়া সাক্ষরতাকে অন্য যেকোন সময়ের চেয়ে বেশি প্রাসঙ্গিক করে তুলেছে সত্য। কিন্তু মিডিয়ার প্রভাব ও মিডিয়া সাক্ষরতার গুরুত্ব নিয়ে নানা প্রশ্ন অনেক অনেক আগে থেকেই আলোচিত হয়ে এসেছে। এটাও লক্ষণীয় যে মিডিয়ার পক্ষে-বিপক্ষে বিভিন্ন বিতর্ক একইসাথে নবাগত প্রযুক্তি, শিল্প (আর্ট ও ইন্ডাস্ট্রি উভয় অর্থে), এমনকি সংস্কৃতির গতিপথকে সময় সময় প্রভাবিত করে এসেছে। তবে ১৯৬০ এর দশক পর্যন্ত পরিভাষা বা গবেষণাক্ষেত্র হিসাবে এর অস্তিত্ব ছিল না। যতদিন না বিষয়টি যোগাযোগ স্কলার ও মিডিয়া প্রফেশনালদের কাজের ক্ষেত্র হয়ে ওঠে তার আগ পর্যন্ত (কিংবা এখনো কিছুসময়) যোগাযোগ সংশ্লিষ্ট ভাবনাসমূহ পরিচালিত হয়/হয়েছে তাত্ত্বিক, দার্শনিক, সমাজবিজ্ঞানী, মনোবিজ্ঞানী ও ভাষাতত্ত্ববিদদের দ্বারা। এ যাবৎ মিডিয়া সাক্ষরতা নিয়ে যত তত্ত্বীয় চিন্তা হয়েছে তাতে --- প্লেটো থেকে ফ্রয়েড, সসার (১) থেকে সিক্সাস (২) --- প্রত্যেকেরই রয়েছে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা। উৎপত্তি ও সংজ্ঞা এই তথ্য মোটেও অভিন...

বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি : প্রাচীন অর্বাচীন তর্ক

এই লেখাটা ২০১৪ সালে প্রকাশিত হয় যোসেফাইট কালচারাল ফোরামের বার্ষিক ক্রোড়পত্র ত্রিলয়-এ। আমি তখন সেন্ট যোসেফ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণির ছাত্র প্রাচীন -  ওই অর্বাচীনদের আমি শতবার সতর্ক করেছি, আর যা-ই করো, আত্মপরিচয় কখনো হারাবে না। স্পষ্টই দেখতে পাচ্ছি এদের সামনে যেন ঘোর অন্ধকার। নিজেদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি সবকিছু ভুলে গিয়ে এরা আজ পাশ্চাত্যের অনুকরণে ব্যস্ত। নিজের চশমার 'স্টাইল'টা যতই বাজে হোক না কেন ওটা পরেই তুমি স্বচ্ছ দেখবে। তা না করে যদি অন্যের চশমা চোখে দাও, তোমাকে মানাবে হয়তো ভালো কিন্তু হোঁচট খেতে হবে পদে পদে। অর্বাচীন - তোমার কথায় কেমন যেন ছাপাখানার গন্ধ। তোমার বয়স হয়েছে। তাই চোখে সমস্যা। চোখের পাতা বন্ধ করে তুমি অতীতটাকে সোনালি রঙের মনে করো। আর চোখ মেলে ভবিষ্যৎ দেখতে গেলেই তোমার মনে হয় সেটা বুঝি অন্ধকার। অর্বাচীনদের যতই গালি দাও।পশ্চিমা চিকিৎসার সাহায্য নিয়েই দেখো না চোখটা ভালো হয় কি না। প্রাচীন - বাবা! আজকালকার ছেলেমেয়েরা এক কথার পিঠে একশ কথাকে চাপায়। আমাদের যুগে বড়রা বলত। ছোটরা শুনত। তার থেকেই শিক্ষা নিত। এখনকার ছেলেমেয়দের কথা ...

ইফরিত

মোহাম্মদপুরের এক ভীষণ ব্যস্ত সড়কের পাশে আমাদের দুই বেড-ড্রয়িং-ডাইনিং এর ভাড়া বাসা। বাসাটা যখন নেয়া হয় তখন আমি তিন মাসের প্রেগন্যান্ট। এই এলাকায় ভাড়া তুলনামূলক বেশি। কিন্তু সদ্য তোলা বাড়ি আর তমালের অফিসও কাছেই হয় তাই ভাবলাম - এই ভালো। বাসায় উঠে গোছগাছ তখনো সারিনি। এক মাস গেছে কি যায়নি তখন থেকে সমস্যাটার শুরু। তমাল অফিস করে ফিরতে রাত নয়টা দশটা বাজত। খেয়েদেয়ে ঘুমিয়ে পড়তেও সময় নিত না। আমি কোনদিন ওর সাথে শুয়ে পড়তাম, কোনদিন গল্পের বই পড়তাম অথবা ডায়েরি লিখতাম। এক রাতে টেবিল ল্যাম্প জ্বেলে কিছু একটা পড়ছি হঠাৎ দরজায় টোকা দেয়ার মতো আওয়াজ পেলাম। আমার কান খুব খাড়া। আওয়াজটা বাইরের ঘর থেকে এসেছে বুঝতে অসুবিধা হয় না। রাত্রি একটার সময় কে বড় দরজায় টোকা দিবে? পড়ায় মন ফিরিয়েছি মিনিটও হয়নি আবার... নক নক। খুব স্পষ্ট আওয়াজ। ভাবলাম সত্যিই বুঝি কেউ এসেছে। রাত হয়েছে বলে কলিং বেল টিপছে না। উঠে গিয়ে দরজার ফুটোয় চোখ রাখলাম। সারারাত বাহিরের আলো জ্বলত। কাউকে দেখলাম না। ঘরে ফিরে আসার কিছক্ষণের মধ্যেই আবার... নক নক। এবার আর দেখতে গেলাম না। দরকার হয় বেল বাজাবে। শীত করছিল। আলো নিভিয়ে তমালকে জড়িয়ে শুয়ে পড়ল...

TFP 207 Personal Note : SET DESIGN AND ART DIRECTION

FILM AS A GRAPHICO-NARRATIVE STRUCTURE How is film different from other art media? → Every art form has its basic element. For literature, it is the word. For painting, it is paper. While sculptures and architecture are both material arts, the biggest difference between sculpture and architecture is that, unlike the latter, sculptures don’t necessarily require an interior. Theatre is basically about the performance. All these elements are present in the film. However, moving space is the basic element of the film. Space is the predominating feature in a film e.g. the EST shots. Temporality is like music duration that theatre hasn’t. That’s why the film has a leitmotif e.g. the camera in ‘Rear Window’.  The film is a unique art form in the sense that, visual against a specific time is the only prerequisite in film.  Theatre needs casts though it’s not essential for film. A true film should be the one that is difficult to transform in any other media. Although literature and the...