সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

2021 থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

চলচ্চিত্রের নির্ণায়কসমূহ: জেমস মোনাকোর পাঠ অবলম্বনে

শৈল্পিক অভিজ্ঞতাকে আমরা উৎপাদন অথবা ভোগ যে প্রেক্ষাপট থেকেই দেখি না কেন - আমাদের অভিজ্ঞতা কিছু সংখ্যক নির্ণায়ক দ্বারা প্রভাবিত হয়। চলচ্চিত্র গবেষক জেমস মোনাকো তাঁর 'FILM AS AN ART' প্রবন্ধে নির্ণায়কসমূহের নাম, তাদের সমালোচনা পদ্ধতি এবং কার্য সম্পাদন সম্পর্কে একটি রূপরেখা প্রদান করেছেন। নিম্নে এর পরিবর্ধিত রূপ প্রকাশ করা গেল -      সামাজিক রাজনৈতিক নির্ণায়ক:  ঐতিহাসিকভাবে রাজনৈতিক নির্ণায়কই হলো প্রাথমিক। এই নির্ণায়ক দ্বারাই নির্ধারিত হয় একটি শিল্প অথবা শিল্পকর্ম সামাজিকভাবে কীভাবে ব্যবহৃত হবে। এক্ষেত্রে, উৎপাদনের চেয়ে ভোগ বেশি গুরুত্বপূর্ণ। গ্রীক ও রোমান মতবাদ অনুযায়ী, শিল্পকে জ্ঞানতাত্ত্বিক ক্রিয়াকলাপ হিসাবেই দেখা হোত। বিশেষত, তখন জ্ঞানের অভিমুখে যাত্রাকে দেখা হোত ধর্মীয় যাত্রা হিসাবে। এ ধরনের মতবাদ সামাজিক রাজনৈতিক শ্রেণীকরণের অন্তর্ভুক্ত। রাজনৈতিক নির্ণায়ক শিল্পকর্ম ও তাকে প্রতিপালনকারী সমাজের মধ্যকার সম্পর্ককে ব্যাখ্যা করে।  মনস্তাত্ত্বিক নির্ণায়ক:   অন্যদিকে এই নির্ণায়ক হল অন্তর্মুখী। কারণ এই আলোচনা শিল্পকর্মের সাথে বহির্বিশ্বের সম্পর্ককে নয়; বর...

বাংলায় ভৌগোলিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় বিবর্তনের সংক্ষিপ্তসার

হিমালয় পর্বত উঠে এসেছে টেথিস সাগরের বুক থেকে। হিমালয় ও বিন্ধ্যের গঠনের সময় ওরোজেনিক/টেকটনিক আন্দোলনের কারণে বিভিন্ন প্লেট উৎপন্ন হয়। তার একটি সাবপ্লেট হলো বঙ্গ। এরপর বিভিন্ন ভৌগোলিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে বঙ্গভূমি গিয়েছে।                বঙ্গের ভূমি প্রাকৃতিকভাবে ভিন্ন। এর তিনদিকে পাহাড় ও নিম্নে জল। বঙ্গভূমির সাথে দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মিল নাই। এর রয়েছে প্রাকৃতিক বেষ্টনী। তাই বলা যায়, বাংলার সীমানা দুইটি - একটি রাজনৈতিক বাংলা এবং একটি ভৌগোলিক বাংলা। আসাম, ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গের পুরোটা, মেঘালয় প্রায় পুরোটা, ঝাড়খণ্ড, উড়িষ্যা, বিহারের অর্ধেকটা নিয়ে প্রকৃতি প্রদত্ত প্রাচীর ঘেরা বাংলার ভৌগোলিক সীমা। এই ভূমির পশ্চিমে গৌড়ীয় সংস্কৃতি, ভাষা ও সাহিত্যের প্রাধান্য ছিল। পূর্বে প্রাধান্য ছিল বঙ্গের। বাংলাদেশ একটি রাজনৈতিক এলাকা। আর সাংস্কৃতিক এলাকা বলতে বোঝায় যত জায়গায় বাংলা সংস্কৃতির চর্চা রয়েছে। এ অঞ্চলে ভূপ্রকৃতি অত্যন্ত সক্রিয় ও সদা পরিবর্তনশীল। একইভাবে এর সমাজও পরিবর্তনশীল ও সক্রিয়। কারণ, প্রাকৃতিক পরিবর্তনজনিত চ্যালেঞ্জের প্রতিক্রিয়া হলো...

কমরেড ভগত সিংয়ের শেষ চিঠি

[শহীদ বিপ্লবী ভগত সিং যখন লাহোর কারাগারে ইংরেজ সরকারের হাতে বন্দী তখন তাঁর কমরেডরা পরিকল্পনা করছিলেন জেল ভেঙে তাঁকে উদ্ধার করে আনার। ২৩ মার্চ ১৯৩১ সালে তাঁর মৃত্যুদণ্ডের ক্ষণকে সামনে রেখে ভগত সিং সহযোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে উর্দুতে এই চিঠি লেখেন।] কমরেডগণ! এ কথা গোপন করতে চাই না যে বাঁচবার স্বাভাবিক সাধ তো আমারও ছিল। কিন্তু শুধু এই এক শর্তেই আমি বাঁচতে পারি যে, কোনো বাঁধা বা বন্দিত্বের জীবন আমি চাই না।       আমার নাম হিন্দুস্তানি বিপ্লবের এক নিদর্শনে পরিণত হয়েছে, আর বিপ্লবী দলের আদর্শ ও ত্যাগ আমাকে অনেক উঁচুতে তুলে দিয়েছে — এতখানি উচ্চতায় যে আমি বেঁচে রইলে এর ঊর্ধ্বে আর কোনো অবস্থানে নিশ্চিতভাবেই থাকতে পারব না।      আজ আমার দুর্বলতাগুলো মানুষের চোখে ধরা পড়ছে না। আমি যদি ফাঁসির দড়ি এড়াই, সেই দুর্বলতাগুলো তখন স্পষ্ট হবে এবং বিপ্লবের প্রতীকে হয় কালিমা লাগবে, অথবা তা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। অথচ যদি বুকে সাহস নিয়ে ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়াই তাহলে হিন্দুস্তানি মায়েরা ভগত সিংয়ের মতো সন্তান চাইবে এবং দেশের জন্য প্রাণ দেয়া মানুষের সংখ্যা এত বেড়ে যাবে যে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি কি ...

সুবর্ণরেখা - সম্পাদনা কৌশল

ঋত্বিক ঘটক চলচ্চিত্র ‘সম্পাদনা’ নামক নিবন্ধে একে বলেছেন ছবির ‘সম্রাট’ বলেছেন। একইসাথে বলছেন এটি চলচ্চিত্রের সবচেয়ে বড় খুঁটি। আইজেনস্টাইনের ‘দ্বন্দ্ব’ ও পুদোভকিনের ‘সমন্বয়’ প্রাচীন হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত এটিই চলচ্চিত্র সম্পাদনার ভিত্তি হয়ে রয়েছে। ঋত্বিকের মতে, ছবি তৈরি করতে গিয়ে যে কয়টি অস্ত্র নির্মাতার হাতে থাকে তার মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র হচ্ছে সম্পাদনা। ‘মন্তাজ’ শীর্ষক অপর এক নিবন্ধে ফিল্মকে বলছেন ‘অত্যন্ত মার্ক্সিস্ট ব্যাপার’। ‘সুবর্ণরেখা’ ছবির সম্পাদনাতেও সেই একই মার্ক্সবাদী থিসিস অ্যান্টিথিসিসের দ্বন্দ্ব সুস্পষ্ট।   চিত্রগ্রাহক দিলীপ রঞ্জন মুখার্জী সম্পাদক রমেশ যোশি মুক্তি ১ অক্টোবর ১৯৬৫ দৈর্ঘ্য ১৪৩ মিনিট দেশ ভারত ভাষা বাংলা     ধারাবাহিকভাবে যদি বলা হয়, সুবর্ণরেখা শুরু হয় ফেড ইন দ্বারা। এরপর একটি দীর্ঘ শটে শিরোনাম ও কলাকুশলীদের নাম স্ক্রলে দেখানো হয়। পিছনে আবহ সঙ্গীত চলে। পটভূমি বলার জন্য ওই স্ক্রলটিকেই ব্যবহার করা হয় যেমনটা প্রচলন ছিল নির্বাক যুগের ছবিতে। পরবর্তীতেও ছবির অনেক স্থানেই দীর্ঘতর সময়ের ব্যবধান নির্দেশ করে ইন্টারটাইটেলের ব্যবহার দেখতে পাই।...

কাহিনীকৌশল ও চিত্রনাট্য লিখন সিরিজ - শেষ পর্ব [চিত্রনাট্য বিন্যস্তকরণ]

শট বিভাজন ছবির নির্মাতা চিত্রগ্রহণের সুবিধার্থে চিত্রনাট্যকে ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর অংশে বিভাজিত করে। এগুলো হলো -  শট বা দৃশ্যাংশ : ক্যামেরা একবার চালু করা থেকে বন্ধ করা পর্যন্ত যেটুকু ধারণ করা হয় সেটাই শট।   সীন বা দৃশ্য : নিরবিচ্ছিন্নভাবে একটি নির্দিষ্ট স্থান, কাল, বা চরিত্রের দৃষ্টিকোণ অপরিবর্তনীয় থাকলে তাকে দৃশ্য বলে। সিকোয়েন্স বা দৃশ্যপর্যায়  : দৃশ্যপর্যায় হলো গল্পের মধ্যে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ অংশ। এর নিজস্ব টান (মূল টান নয় কিন্তু মূলের সাথে কোনভাবে সম্পর্কযুক্ত) থাকে। এর নিজস্ব শুরু, মধ্যভাগ, ও শেষ থাকে।    চিত্রনাট্যের বিন্যাসরীতি প্রকারভেদ ট্রিটমেন্ট রীতি মধ্য-কলাম রীতি পূর্ণ-পৃষ্ঠা রীতি দুই-কলাম বা বিভক্ত-পৃষ্ঠা রীতি মধ্য-কলাম রীতি চিত্রনাট্যের সঠিক বিন্যাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান, স্টুডিও, পরিচালক, বা প্রযোজক ত্রুটিপূর্ণভাবে বিন্যস্ত চিত্রনাট্য কখনোই পড়বেন না।  ফন্ট : ১১ পয়েন্ট সংলাপ ও ক্রিয়ার মধ্যে ফাঁকা অংশ (দুই লাইন) বাম মার্জিন: ১" - ১.২৫" ডান মার্জিন: ১" - ১.২৫" সংলাপের জন্য বাম দিক থেকে ফাঁকা: ২"...

কাহিনীকৌশল ও চিত্রনাট্য লিখন সিরিজ - পর্ব ৯ [প্রকল্প প্রস্তাব]

প্রকল্প প্রস্তাবের প্রথম পাতায় থাকবে নাম ও অন্যান্য তথ্যের বিবরণ। এরপর ধারাবাহিকভাবে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো সংযুক্ত হবে : ১। কার্যাধীন শিরোনাম ২। জনরা ৩। এক লাইনের সারমর্ম লগ লাইন  ৪। এক অনুচ্ছেদের সারমর্ম বা সিনোপসিস ৫। মূলভাব বা থিম ৬। পিচ ৭। অনুপ্রেরণা/অবলম্বন ৮। চরিত্র ৯। কৌশল বা ট্রিটমেন্ট ১০। স্টোরিবোর্ড কার্যাধীন শিরোনাম একে কখনো নির্মাণ শিরোনাম অথবা প্রস্তাবিত শিরোনামও বলা হয়। এটি কোনো পণ্য বা প্রকল্প বিকাশলাভের সময়, সাধারণত চলচ্চিত্র নির্মাণ, টেলিভিশন অনুষ্ঠান, ভিডিও গেম, সঙ্গীত অ্যালবাম তৈরি অথবা উপন্যাস লেখার কালে অস্থায়ী শিরোনাম হিসেবে ব্যবহৃত হয়। শিরোনামের গুরুত্ব একটি ভালো শিরোনাম একটি ভালো সূচনা অনুচ্ছেদের অনুরূপ : একে অবশ্যই কৌতুহলোদ্দীপক হতে হবে।   পাঠকের মনোযোগ আকর্ষণ করতে হবে। বাকি অংশের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। যেন রচনার বিষয়, যুক্তি, ও পদ্ধতির সাথে সহাবস্থানে থাকে। একটি শক্তিশালী শিরোনাম পাঠককে তথ্য দেয়া আশ্বস্ত করার কাজটি শুরু করে। শিরোনামের আরেকটি কাজ হলো রচনার বিষয়বস্তু ও মূল ভাবনা সম্পর্কে পাঠককে ধারণা দেয়ার মাধ্যমে তাদের মনোযোগ ও আগ্রহ আকর্ষণ করা।...

কাহিনীকৌশল ও চিত্রনাট্য লিখন সিরিজ - পর্ব ৮ [দৃশ্য]

দৃশ্য কী দৃশ্য হলো গল্পের একটি ভাগ যেখানে চরিত্ররা ক্রিয়া বা সংলাপে রত থাকে। দৃশ্যকে শুরু, মধ্য, ও শেষ আছে এমন গল্প হিসেবে ভাবা যায়। সাধারণত, চরিত্রের দৃষ্টিকোণ, প্রেক্ষাপট, অথবা সময় বদলালে নতুন দৃশ্যের অবতারণা করতে হয়। দৃশ্যের উপাদান চরিত্র পটভূমি দ্বন্দ্ব সংলাপ একটি সফল নাটকীয় দৃশ্য - আরম্ভ পর্যায়ে পটভূমি ও চরিত্রদের পরিচয় করিয়ে দেয়; পটভূমি ও চরিত্র ব্যবহার করে বিশ্বাসযোগ্য জগৎ তৈরি করে; স্বচ্ছ ও কৌতুহলোদ্দীপক পরিস্থিতি বা দ্বন্দ্ব তৈরি করে; সংলাপের মধ্য দিয়ে চরিত্রদের ব্যক্তিত্ব প্রকাশ করে; গল্পকে এগিয়ে নিতে ক্রিয়ার পাশাপাশি সংলাপের ব্যবহার করে; একটি মাত্র নাটকীয় ক্রিয়া থাকে; অল্পকিছু চরিত্র থাকে; দীর্ঘ কথাসর্বস্ব বক্তৃতা থাকে না; একটি মাত্র সেট ব্যবহার করে। দৃশ্য লেখার নিয়ম ১। উদ্দেশ্য শনাক্ত করা লেখায় গতি থাকবে, বলার চেয়ে দেখানর ওপর জোর দিতে হবে, এবং মূল চরিত্রের প্রতি মানুষের সহানুভূতি জাগাতে হবে। প্রতি দৃশ্যে রহস্য ও দ্বন্দ্ব থাকবে যাতে পাঠক পাতা ওল্টাতে থাকে। বাস্তব জীবনে যখন একটি ঘটনা ঘটে, মানুষ প্রতিক্রিয়া দেখায়, কী ঘটল তা নিয়ে চিন্তা করে, তারপর নতুন কাজের সিদ্ধান্ত নেয়। একইভ...

কাহিনীকৌশল ও চিত্রনাট্য লিখন সিরিজ - পর্ব ৭ [সংলাপ]

সংলাপ কী সংলাপ হলো একটি গল্পের দুই বা ততোধিক চরিত্রের মধ্যে কথপোকথন।  ভালো সংলাপ সঙ্গীতের মতো। এর তাল, ছন্দ, ও সুর থাকে। সাধারণত কোনো চরিত্র তিন লাইনের অধিক কিছু বলে না। ভালো সংলাপ দ্বন্দ্ব, স্বভাব, ও উদ্দেশ্য প্রকাশ করে। ছন্দের কারণে ভালো সংলাপ সহজে পাঠ করা যায়। উদ্ধরণ চিহ্ন দ্বারা কাহিনী থেকে সংলাপকে পৃথক করা হয়। সংলাপের গুরুত্ব বৈচিত্র্য যোগ করে; গল্পে বাস্তবসম্মত উপাদান যোগ করে; গল্পের  মেজাজ উন্নত করতে সাহায্য করে; চরিত্রকে উন্নত করতে সাহায্য করে। গুরুত্বপূর্ণ পরিভাষা উদ্ধরণ চিহ্ন - ""   প্রশ্নবোধক চিহ্ন - ? আশ্চর্যবোধক চিহ্ন - ! পূর্ণচ্ছেদ - । কমা - , ট্যাগ লাইন - যে বাক্যাংশ দ্বারা সংলাপের মালিকানা প্রদর্শিত হয়। সংলাপের নিয়ম ১। নতুন বক্তা, নতুন অনুচ্ছেদ - সংলাপ এক বক্তা থেকে আরেক বক্তায় গেলেই নতুন প্রতিবার অনুচ্ছেদ শুরু করতে হবে।  ২। পুরো বাক্যটি শেষ না হলে সংলাপের শেষে কখনো পূর্ণচ্ছেদ ব্যবহার করা যাবে না। ৩। সরল রাখতে হবে - দর্শক যেন সহজেই কথোপকথনকে অনুসরণ করতে পারে এবং বুঝতে পারে কে কখন কথা বলছে। ৪। বাস্তবসম্মত সংলাপ লিখতে হবে, যেন তা বিশ্বাসযোগ্য হ...

কাহিনীকৌশল ও চিত্রনাট্য লিখন সিরিজ - পর্ব ৬ [চরিত্র সৃজন]

চরিত্র চরিত্রকে ব্যাখ্যা করা হয় তার শারীরিক-মানসিক ক্রিয়ার ভিত্তিতে। মুখ্য চরিত্র : গল্পের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রসমূহ। গৌণ চরিত্র : মুখ্য চরিত্রদের সাথে ক্রিয়ার আদান-প্রদান করে। গল্পে এদের ভূমিকা কম গুরুত্বপূর্ণ।  তারা আখ্যানকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে। চারিত্রিক উদ্দেশ্য : সেই সকল আবেগ, ইচ্ছা, অথবা অভাব যা চরিত্রের ক্রিয়াকে তরান্বিত করে।  চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য : চরিত্রের ব্যক্তিত্বের স্থায়ী গুণাবলী। প্রধান চরিত্র ক্রিয়া ও সেই সংশ্লিষ্ট প্রতিক্রিয়ার ক্ষেত্রে, মূল চরিত্রের ভূমিকা নির্ধারিত হয় কর্মকাণ্ডের উপর। কেন্দ্রীয় চরিত্রের থাকে - সাধন করার সুনির্দিষ্ট করণীয়; পূরণ করার সুনির্দিষ্ট যাত্রা; মীমাংসা করার সুনির্দিষ্ট সমস্যা যাতে চরম সীমায় যাওয়ার পর একটি নতুন সাম্যাবস্থা তৈরি হয় চিত্রনাট্য শেষ করার মতো। চরিত্রায়ন যে পদ্ধতিতে লেখক গল্পের কোনো চরিত্রের বিশেষ বৈশিষ্ট্য ও ব্যক্তিত্বকে বিশ্বাসযোগ্যভাবে প্রকাশ করে। চরিত্ররাই যেকোন ভালো গল্পের মেরুদণ্ড। ক্যারিশমাটিক চরিত্র ছাড়া গল্প অবশ্যই ঝুলে পড়বে। লেখক যে পদ্ধতিতে একটি চরিত্রের ব্যক্তিত্ব ও উদ্দেশ্যর বিকাশ ঘটায় তাকে চরিত্রায়ন ব...

কাহিনীকৌশল ও চিত্রনাট্য লিখন সিরিজ - পর্ব ৫ [তিন অঙ্কের কাঠামো]

তিন অঙ্কের কাঠামো হলো  কল্পকাহিনীতে ব্যবহৃত  এমন একটি নমুনা যার দ্বারা গল্পকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়। এই তিন ভাগকে সাধারণত   বলা হয়  প্রতিষ্ঠা, সংঘাত, এবং মীমাংসা। এটি সিড ফিল্ড প্রণীত একটি আদর্শ নমুনা বা প্যারাডাইম যা চিত্রনাট্যকে একত্রে ধরে রাখে। এতে রয়েছে - শুরু (প্রতিষ্ঠা) মধ্যভাগ (সংঘাত) শেষ (মীমাংসা) এই কাঠামো - যেকোন ধরনের গল্প বা নির্মাণে প্রয়োগ করা যায়। লেখা, চিত্রগ্রহণ, এবং সম্পাদনায় সাহায্য করতে পারে।  গঠন বিন্যাস কার্যত, এই শুরু-মধ্য-শেষ কাঠামোটি একটি নাটকীয় গল্পের চাহিদার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এটি দর্শকের মনোযোগ আকর্ষণ করে, শেষ পর্যন্ত সেই মনোযোগ ধরে রাখে, এবং দর্শককে একটি পূর্ণতার অনুভূতি দিয়ে গল্প শেষ করে। গল্পে শুরুতে সমস্যা আরম্ভ হয়, মধ্যভাগে বিভিন্ন জটিলতার মধ্য দিয়ে সেই সমস্যা বৃদ্ধি পায়, এবং শেষে এসে মীমাংসা হয়। শুরুতে ১। দর্শকের মনোযোগ আকর্ষণ করা হয়; ২। গল্পের সাথে দর্শককে সম্পৃক্ত করা হয়; ৩। গল্প কীভাবে অগ্রসর হবে সেই ব্যাপারে টান ও উৎকণ্ঠা তৈরি করা হয়; ৪। দর্শক মূল চরিত্রদের পরিচয় পায় ও তাদের সাথে ঘনিষ্ঠতার সূত্রপাত ঘটে;  ৫। সূচনা বা...