- শুরু (প্রতিষ্ঠা)
- মধ্যভাগ (সংঘাত)
- শেষ (মীমাংসা)
- যেকোন ধরনের গল্প বা নির্মাণে প্রয়োগ করা যায়।
- লেখা, চিত্রগ্রহণ, এবং সম্পাদনায় সাহায্য করতে পারে।
গঠন বিন্যাস
- কার্যত, এই শুরু-মধ্য-শেষ কাঠামোটি একটি নাটকীয় গল্পের চাহিদার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এটি দর্শকের মনোযোগ আকর্ষণ করে, শেষ পর্যন্ত সেই মনোযোগ ধরে রাখে, এবং দর্শককে একটি পূর্ণতার অনুভূতি দিয়ে গল্প শেষ করে।
- গল্পে শুরুতে সমস্যা আরম্ভ হয়, মধ্যভাগে বিভিন্ন জটিলতার মধ্য দিয়ে সেই সমস্যা বৃদ্ধি পায়, এবং শেষে এসে মীমাংসা হয়।
শুরুতে
মধ্যভাগে বা সংঘাতে
৩। দর্শক সমস্যার সহজ সমাধানের আশায় সন্দিহান হয়ে ওঠে।
শেষে বা মীমাংসায়
৩। পরিশিষ্টে সব জট ছাড়ানো হয় এবং দর্শককে টান টান উত্তেজনা থেকে নিষ্কৃতি দেয়া হয়;
৪। সমাপ্তি একই সাথে দর্শকের উদ্দীপনার অবসান ঘটায় এবং ওই চলচ্চিত্রের সঙ্গে অভিজ্ঞতার ইতি টানে।
তিন অঙ্কের কাঠামো |
প্রথম অঙ্ক (প্রতিষ্ঠা)
সূচনা
গল্পের এই অংশ পরিচয় করিয়ে দেয় নাটকের মূল চরিত্র, নাটকীয় ভিত্তি, ও নাটকীয় পরিস্থিতির সাথে।
- কেন্দ্রীয় চরিত্র - গল্পের সেই ব্যক্তি যার একটি প্রয়োজন/লক্ষ্য পূরণ করতে হবে এবং যার কর্ম গল্পকে চালিত রাখে।
- ভিত্তি - গল্পটি যা নিয়ে।
- পরিস্থিতি - গল্পকে ঘিরে যেসব ঘটনা।
উত্তেজক ঘটনা বা প্রভাবক
উত্তেজক ঘটনা কেন্দ্রীয় চরিত্রের সাথে ঘটতে পারে আবার কেন্দ্রীয় চরিত্র এমন ঘটনা ঘটাতে পারে। কোনটি গল্পের জন্য সর্বোত্তম তা বেছে নেয়া লেখকের সিদ্ধান্ত।
- উত্তেজক ঘটনা সবার প্রথমে ঘটে। এটি সেই ঘটনা যা আদি ক্রিয়াকে সচল করে।
- এটি আংটার ন্যায়। এটি একটি নাটকীয় বর্ণনা বা দৃশ্য প্রথম যা দর্শকের মনোযোগ কাড়ে।
- এটি যত জিজ্ঞাসার উত্তর দেয় তার চেয়ে বেশি প্রশ্ন রেখে দেয়।
উত্তেজক ঘটনাকে সামাল দেয়ার প্রচেষ্টা থেকে প্রধান চরিত্র নতুন ও আরো নাটকীয় যে ঘটনার দিকে অগ্রসর হয় তাকে ১ম আখ্যান বিন্দু বলে। আখ্যান বিন্দু বা প্রতিবর্তন হলো এমন ঘটনা যা গল্পকে একটি নতুন দিকে নিয়ে যায়। ফলে,
- প্রথম অঙ্ক শেষ হয় ও চিত্রনাট্যের একটি নতুন অঙ্ক শুরু হয়।
- নিশ্চিত করে যে মূল চরিত্রের জীবন আর কখনোই আবার আগের মতো হবে না।
- কেন্দ্রীয় চরিত্র এমন এক পরিস্থিতিতে পড়ে যায় যাতে করে তাকে নতুন করে একটি কার্যপ্রবাহ বেছে নিতে হয়।
- এমন একটি প্রশ্ন উত্থাপন করে যার উত্তর দেয়া হবে গল্পের চরম সীমায়।
দ্বিতীয় অঙ্ক (সংঘাত)
১। মূল চরিত্র শুধুমাত্র নতুন দক্ষতা অর্জন করবে তাই নয়, বরং সে কে এবং তার সামর্থ্য কী এই বিষয়ে উচ্চতর সচেতনতাবোধ জাগ্রত হবে।
২। এই পরিবর্তনকে বলা হয় চরিত্র পরিধি। এটি সাধারণত একাকী অর্জন করা যায় না। যাদের সাহায্যে এই অর্জন হয় তাদের বলে পার্শ্ব চরিত্র।
প্রতিবন্ধকতা: দ্বিতীয় অঙ্কে কেন্দ্রীয় চরিত্র একের পর এক প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে থাকে যারা তাকে তার নাটকীয় প্রয়োজন পূরণ করতে বাধা দেয়।
প্রথম আরোহণ: এই পর্যায় আসে যখন প্রধান চরিত্ররা তাদের নাটকীয় লক্ষ্যের আরো কাছাকাছি চলে যায়। এটি গল্পকে সরাসরি মধ্যবিন্দুতে নিয়ে যায়।
মধ্যবিন্দু: অঙ্ক দুইয়ের মাঝখানে যখন প্রধান চরিত্ররা সবচেয়ে দুর্বল অবস্থানে থাকে তখনই কাহিনী বাঁক নেয়। প্রথম আরোহণে তাদের নাটকীয় লক্ষ্য প্রায় পূরণ করে ফেলার পর যে বাঁক আসে, তখন তাদের বরং লক্ষ্য থেকে সবচেয়ে দূরবর্তী দেখায়।
বাধা/উপাখ্যান: দ্বিতীয় অঙ্কের চরম সীমায় পৌঁছানর আগে, প্রধান চরিত্ররা অনেকগুলো উপাখ্যানে জড়িয়ে যায় এবং নানারকম বাধার মুখোমুখি হয়।
দুর্যোগ ও সঙ্কট: এটি ঘটে যখন প্রধান চরিত্ররা এক অলীক নিরাপত্তাবোধ অনুভব করতে থাকে এবং সমস্যার সমাধান তাদের নাগালের মধ্যে বলে মনে হয়। মধ্যবিন্দুতে চরিত্ররা ভুলগুলি শোধরানর যে প্রচেষ্টা করে তার ফলাফলই হলো সঙ্কট। এর পাশাপাশি, খল চরিত্র সম্পর্কে আরো অনেক তথ্য বেরিয়ে আসে।
আখ্যান বিন্দু ২: দ্বিতীয় অঙ্কের চরম সীমা হলো দুর্যোগ ও সঙ্কটের একটি প্রত্যক্ষ ফল। কেন্দ্রীয় চরিত্র এই পর্যায়ে হাল ছেড়ে দিতে চাইলেও উপলব্ধি করে যে সমস্যাকে সামনাসামনি মোকাবিলা করাই একমাত্র উপায়।
তৃতীয় অঙ্ক (মীমাংসা)
গল্প ও তার উপাখ্যানগুলোর মীমাংসা দেখানো হয়।
চরম সীমা (দ্বিতীয় আরোহণ): চরম সীমা বা ক্লাইম্যাক্স এমন একটি দৃশ্য বা দৃশ্যপর্যায় যেখানে গল্পের মূল উত্তেজনাকে তীব্রতম বিন্দুতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পূর্বোক্ত নাটকীয় প্রশ্নের উত্তর দেয়া হয়। এই পর্যায়ে আখ্যান সর্বোচ্চ টানে গিয়ে পৌঁছায়। শারীরিক-মানসিক ক্রিয়ার চূড়ান্তে গিয়ে বিরোধী শক্তিরা পরস্পরকে চ্যালেঞ্জ জানায়।
পরিশেষ: ছবির শেষে শান্তির সংক্ষিপ্ত মুহূর্ত যখন একটি স্থিতিশীল অবস্থা ফিরে আসে। মূল চরিত্র ও অন্যান্যদের মধ্যে এক নতুন আত্মোপলব্ধির জন্ম হয়।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন