দৃশ্য কী
দৃশ্যের উপাদান
- চরিত্র
- পটভূমি
- দ্বন্দ্ব
- সংলাপ
একটি সফল নাটকীয় দৃশ্য -
- আরম্ভ পর্যায়ে পটভূমি ও চরিত্রদের পরিচয় করিয়ে দেয়;
- পটভূমি ও চরিত্র ব্যবহার করে বিশ্বাসযোগ্য জগৎ তৈরি করে;
- স্বচ্ছ ও কৌতুহলোদ্দীপক পরিস্থিতি বা দ্বন্দ্ব তৈরি করে;
- সংলাপের মধ্য দিয়ে চরিত্রদের ব্যক্তিত্ব প্রকাশ করে;
- গল্পকে এগিয়ে নিতে ক্রিয়ার পাশাপাশি সংলাপের ব্যবহার করে;
- একটি মাত্র নাটকীয় ক্রিয়া থাকে;
- অল্পকিছু চরিত্র থাকে;
- দীর্ঘ কথাসর্বস্ব বক্তৃতা থাকে না;
- একটি মাত্র সেট ব্যবহার করে।
দৃশ্য লেখার নিয়ম
১। উদ্দেশ্য শনাক্ত করা
- লেখায় গতি থাকবে, বলার চেয়ে দেখানর ওপর জোর দিতে হবে, এবং মূল চরিত্রের প্রতি মানুষের সহানুভূতি জাগাতে হবে।
- প্রতি দৃশ্যে রহস্য ও দ্বন্দ্ব থাকবে যাতে পাঠক পাতা ওল্টাতে থাকে।
- বাস্তব জীবনে যখন একটি ঘটনা ঘটে, মানুষ প্রতিক্রিয়া দেখায়, কী ঘটল তা নিয়ে চিন্তা করে, তারপর নতুন কাজের সিদ্ধান্ত নেয়। একইভাবে, দৃশ্যেও ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া-চিন্তা-নতুন ক্রিয়া থাকে।
- প্রত্যেক দৃশ্যকে যেন এক বাক্যে প্রকাশ করা যায়।
- নিশ্চিত করতে হবে দৃশ্যের প্রত্যেক উপাদান তার উদ্দেশ্যের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।
২। সর্বোচ্চ মুহূর্ত শনাক্ত করা
- সর্বোচ্চ মুহূর্ত আসে দৃশ্যের শেষ দিকে, এমনকি শেষ লাইনেও হতে পারে। যেহেতু বেশিরভাগ দৃশ্য পুরো গল্পকেই অনুকরণ করবে তাই তাদের প্রত্যেকের একইভাবে শুরু, মধ্যভাগ, সর্বোচ্চ সীমা, ও শেষ থাকে।
৩। দ্বন্দ্বের ওপর জোর দেয়া: ভেতরে ও বাইরে
- প্রত্যেক দৃশ্যের থাকবে উত্তেজনা, অন্তর্দ্বন্দ্ব, ও উচ্চ-ঝুঁকির উপাদান। দ্বন্দ্ব তৈরির জন্য বিস্ফোরক ক্রিয়ার প্রয়োজন নাই।
- অন্তর্দ্বন্দ্ব: কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া অথবা কোনো অনুভূতিকে জয় করা। চরিত্রের নিজের সাথে নিজের দ্বন্দ্বই অন্তর্দ্বন্দ্ব।
- বহির্দ্বন্দ্ব: সাধারণত ব্যক্তির সাথে অন্য কারো বা অন্য কিছুর দ্বন্দ্ব। যেমন, ব্যক্তি বনাম অন্য ব্যক্তি বা ব্যক্তিসমূহ, ব্যক্তি বনাম প্রকৃতি, ব্যক্তি বনাম ঘটনা বা পরিস্থিতি।
৪। চরিত্রের পরিবর্তন মজবুত করা
- সাহিত্য নির্দেশক জেমস স্কট বেল বলেন, "প্রত্যেক দৃশ্যে একটি মৃত্যু থাকতে হবে" - স্বপ্নের, সম্পর্কের, অথবা পরিকল্পনার।
- ঘটনার মধ্য দিয়ে চরিত্রের মধ্যে পরিবর্তন ঘটবে। তা হতে পারে সিদ্ধান্তের পরিবর্তন অথবা ব্যক্তিত্বের মধ্যে বড় পরিবর্তন।
- দর্শক যে চরিত্রের মধ্য দিয়ে সবচেয়ে ভালোভাবে দৃশ্যটি উপভোগ করতে পারবে তাকে বেছে নেয়া।
- দৃশ্যের উদ্দেশ্য একবার নির্ধারণ করতে পারলে দৃষ্টিকোণ বেছে নেয়া সহজ হয়ে যায়।
- দৃষ্টিকোণ নির্বাচন করতে হলে বিবেচনায় রাখতে হবে:
- যে আবেগিকভাবে সবচেয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখাবে;
- যে সবচেয়ে বেশি বদলাতে পারে;
- যার প্রতিক্রিয়া আখ্যানে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখবে।
- দৃশ্যগঠন প্রক্রিয়ার এই ধাপে খসড়ার মধ্য দিয়ে অন্বেষণ করতে হবে এবং এমন জোরালো সব বিবরণ দিয়ে দৃশ্যে প্রাণ আনতে হবে যা পাঠকের ইন্দ্রিয় অনুভূতিকে জড়িত করে।
- পাঁচটি সংবেদনশীল উপাদান হলো দৃশ্য, শব্দ, স্পর্শ, স্বাদ, ঘ্রাণ।
দৃশ্য আরম্ভ করার পাঁচটি উপায়
১. ক্রিয়া:
২. সারমর্ম:
কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেখানর চেয়ে বলা উত্তম। কখনো কখনো চরিত্রের ক্রিয়ার খুঁটিনাটি দিয়ে দৃশ্য আরম্ভ করতে গেলে বড্ড দ্রুত বড্ড গভীরে চলে যাওয়া হয়। একটি সাধারণ বর্ণনামূলক বিবৃতি (যা পাঠককে ধারণা দেয় গল্প শুরুর আগে কী ঘটেছে) অনেক শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে পারে। যেমন, "পুলিশ তার লাশ খুঁজে পাওয়ার তিন দিন আগে সে খুন হয়।"
৩. চরিত্রের কোনো ভাবনা উদঘাটন:
চরিত্রের ভাবনা প্রকাশ করা যায় নিম্নোক্ত ক্ষেত্রে -
- আখ্যানকে ধীর করতে;
- সত্যটা বলার জন্য;
- দুর্বলতা প্রকাশের জন্য;
- প্রেরণা জোগাতে;
- তাৎপর্য যোগ করতে;
- চরিত্রের মেরুকরণ করতে।
৪. পটভূমি:
অনেক লেখক চমৎকার পটভূমি দিয়ে মঞ্চায়ন আরম্ভ করে। পটভূমির বর্ণনা বিশেষভাবে কার্যকর হয় যখন আখ্যানের অগ্রগতিতে পটভূমির গুরুত্ব থাকে।
৫. সংলাপ:
দুইটি চরিত্রের কথোপকথনের মধ্যে পাঠককে টেনে ধরা তাৎক্ষণিকভাবে কাজে দেয়।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন