চরিত্র
- চরিত্রকে ব্যাখ্যা করা হয় তার শারীরিক-মানসিক ক্রিয়ার ভিত্তিতে।
- মুখ্য চরিত্র: গল্পের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রসমূহ।
- গৌণ চরিত্র: মুখ্য চরিত্রদের সাথে ক্রিয়ার আদান-প্রদান করে। গল্পে এদের ভূমিকা কম গুরুত্বপূর্ণ।
- তারা আখ্যানকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে।
- চারিত্রিক উদ্দেশ্য: সেই সকল আবেগ, ইচ্ছা, অথবা অভাব যা চরিত্রের ক্রিয়াকে তরান্বিত করে।
- চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য: চরিত্রের ব্যক্তিত্বের স্থায়ী গুণাবলী।
- সাধন করার সুনির্দিষ্ট করণীয়;
- পূরণ করার সুনির্দিষ্ট যাত্রা;
- মীমাংসা করার সুনির্দিষ্ট সমস্যা যাতে চরম সীমায় যাওয়ার পর একটি নতুন সাম্যাবস্থা তৈরি হয় চিত্রনাট্য শেষ করার মতো।
চরিত্রায়ন
যে পদ্ধতিতে লেখক গল্পের কোনো চরিত্রের বিশেষ বৈশিষ্ট্য ও ব্যক্তিত্বকে বিশ্বাসযোগ্যভাবে প্রকাশ করে।
- চরিত্ররাই যেকোন ভালো গল্পের মেরুদণ্ড। ক্যারিশমাটিক চরিত্র ছাড়া গল্প অবশ্যই ঝুলে পড়বে।
- লেখক যে পদ্ধতিতে একটি চরিত্রের ব্যক্তিত্ব ও উদ্দেশ্যর বিকাশ ঘটায় তাকে চরিত্রায়ন বলে।
- দুর্বল চরিত্রায়নের কারণে চরিত্র অনাকর্ষণীয় হয়ে উঠতে পারে, কারণ সেই চরিত্রের ফোকাস ও স্বচ্ছতায় ঘাটতি থাকবে।
- ভালো চরিত্রায়ন পাঠকের মনে চরিত্রের একটি সুস্পষ্ট চিত্র তৈরি করতে সক্ষম।
পদ্ধতি
কাহিনী ও নাট্যশিল্পে ব্যক্তির উপস্থানকে চরিত্রায়ন বলে। এই উপস্থাপন দুইভাবে হতে পারে -
প্রত্যক্ষ পদ্ধতি
যেখানে বর্ণনা বা মন্তব্যের মধ্য দিয়ে বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ থাকে। যখন লেখক বলে একজন চরিত্র হীন, বদরাগী, অথবা বন্ধুত্বসুলভ এটি প্রত্যক্ষ চরিত্রায়ন। প্রত্যক্ষ চরিত্রায়নে সুনির্দিষ্ট তথ্য দেয়া হয়। যেমন, অতনুকে সবাই শান্তশিষ্ট, ধৈর্যশীল বলে চেনে।
অপ্রত্যক্ষ পদ্ধতি
পাঠককে সুযোগ দেয়া হয় চরিত্রের ক্রিয়া, সংলাপ, বা বাহ্য রূপ দেখে তার বৈশিষ্ট্য অনুধাবনের। লেখকরা সাধারণত অপ্রত্যক্ষ চরিত্রায়ন ব্যবহার করতে পছন্দ করেন। এ পদ্ধতিতে লেখকরা চরিত্রের ক্রিয়া দেখান, যাতে করে পাঠকরা ভেবে নিতে পারে চরিত্রটি কেমন।
নিম্নোক্ত বিষয় প্রকাশ করে চরিত্র সম্বন্ধে ধারণা দেয়া যায়।
- বাহ্যিকতা: চরিত্রের পোশাক, মুখভঙ্গি, দেহভাষা, এবং আচরণ।
- ক্রিয়া: একজন চরিত্র সম্বন্ধে আমরা যা জানতে পারি তার বেশিরভাগটাই প্রকাশ পায় তার কাজকর্মে।
- কথা: চরিত্ররা পরস্পরকে কী বলে তার মধ্য দিয়ে চরিত্র সম্বন্ধে জানা যায়।
- চিন্তা ও অনুভূতি: লেখক যখন চরিত্রের চিন্তার ভেতর ঢুকতে দেয় তখন আমাদের সামনে বহুকিছু বেরিয়ে আসে।
- সম্পর্ক: কখনো এক চরিত্র আরেক চরিত্র সম্বন্ধে গুরুত্বপূর্ণ কিছু আমাদের জানায়।
চারিত্রিক বিকাশ
১ম ধাপ: চরিত্র ও গল্পে চরিত্রদের ভূমিকা শনাক্ত করা।
- চরিত্র কারা;
- চরিত্রের ভূমিকা কী;
- অপরাপর চরিত্রের সাথে তাদের সম্পর্ক কী;
- একে অন্যের সাথে তাদের সম্পর্ক কী;
- চরিত্র কোনো গতানুগতিক ধারার মধ্যে পড়ে যাচ্ছে কিনা;
- কী ধরনের বৈশিষ্ট্য থাকলে চিরাচরিত ধরনগুলি এড়িয়ে যাওয়া যাবে এবং নিশ্চিত হওয়া যাবে যে চরিত্ররা সাদামাটা কিংবা সহজে অনুমেয় হবে না।
২য় ধাপ: চরিত্রের চিন্তার ভেতর প্রবেশ করা।
- চরিত্রের বিকাশ বলতে বোঝায় তারা গল্পের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কতটুকু বিকশিত ও পরিবর্তিত হলো;
- খুঁটিনাটি বিষয়ের ব্যাপারে একান্ত পর্যবেক্ষণ বড় পার্থক্য তৈরি করতে পারে পাঠকের কাছে সেগুলো কীভাবে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে সেই ব্যাপারে।
- এটি গুরুত্বপূর্ণ যাতে চরিত্ররা বাস্তবসম্মত ও বিশ্বাসযোগ্য ব্যক্তিত্ব ও স্বভাবগত পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায়।
৩য় ধাপ: অনুসন্ধান, অনুসন্ধান, অনুসন্ধান।
সরাসরি অভিজ্ঞতা নাই এরকম যেকোন বিষয়ে যতখানি সম্ভব অনুসন্ধান করতে হবে। এমনকি বিষয়টি সম্পর্কে খুব ভালোভাবে অবগত থাকলেও, অনুসন্ধান ও সত্যতা যাচাইয়ের মধ্য দিয়ে নিশ্চিত হবে হবে তথ্যগুলো সঠিক।৪র্থ ধাপ: শক্তিশালী সংলাপ = আরো শক্তিশালী চরিত্র বিকাশ।
- সংলাপকে চরিত্রের ব্যক্তিত্ব ও স্বভাবের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।
- সংলাপকে যথেষ্ট অনন্য হতে হবে যাতে একাধিক চরিত্রের কথপোকথনকে পৃথক করা যায়।
- চরিত্রের প্রতি পাঠকের আশার সাথে তার সংলাপের সঙ্গতি থাকতে হবে।
- সংলাপকে ওই চরিত্রের জন্য বাস্তবানুগ হতে হবে।
৫ম ধাপ: বলা নয়, দেখাতে হবে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন