ওলন্দাজ চিত্রনির্মাতা বার্ট হানস্ত্রা'র গ্লাস চলচ্চিত্রটি ১৯৫৯ সালে হল্যান্ডের প্রথম কোনো ছবি হিসেবে অস্কার লাভ করে। সচরাচর একে 'নিখুঁত স্বল্পদৈর্ঘ্য প্রামাণ্যচিত্র' আখ্যা দেয়া হয়। ছবিটি নেদারল্যান্ডের কাঁচশিল্পকে বিষয় করে কাব্যিক রীতিতে নির্মিত। হানস্ত্রাকে যখন এই বিষয়ের ওপর কাজ করার বরাত দেয়া হয় তখন উনি সিদ্ধান্ত নেন সাদামাটা পরিবেশনের পরিবর্তে শৈল্পিকভাবে বিষয়টিকে উপস্থাপন করার। রঙিন এই চলচ্চিত্রটিতে পরিচালক একদিকে কায়িক শ্রম ও কারুশৈলীর সাহায্যে তৈরি করা শিল্পবস্তুর বিশেষত্ব দেখিয়েছেন। অপরদিকে ক্যামেরার চোখ দিয়ে কটাক্ষ করেছেন ওই একই শিল্পবস্তুর যান্ত্রিক উপায়ে ব্যাপক হারে উৎপাদনকে।
শ্রুতিমধুর জ্যাজ সঙ্গীতকে পশ্চাদপটে রেখে নির্মাতা দেখিয়েছেন ডাচ কাঁচ শ্রমিকরা কীভাবে যত্নের সাথে ছান্দসিকভাবে কাঁচ সামগ্রী তৈরি করে চলেছেন। এই পর্বের সাথে বিপ্রতীপভাবে রোবোটিক বাজনা সহযোগে দেখিয়েছেন যন্ত্র চালিত কারখানায় সারি সারি বোতলের দ্রুতগতির উৎপাদন। যদিও মানুষকে না জড়িয়ে সেখানে নিরবিচ্ছিন্ন কাজ চলে না। যার তাৎক্ষণিক প্রমাণ হিসেবে দেখি, একটি ভাঙা শিশির জন্য কীভাবে একের পর এক শিশি মেঝেতে পড়ে ভেঙে যেতে থাকে একজন শ্রমিক তা লক্ষ্য না করা পর্যন্ত। তারপর, আবারও আমরা ফিরে আসি কামারশালায়। সেখানে চলছে সময়ের সাথে নিপুণ সামঞ্জস্য রেখে গরম কাঁচকে আকৃতি দেয়ার সেই সুচারু কর্মযজ্ঞ। একটু পরে হানস্ত্রা দুই জায়গার ফুটেজের মধ্যে আগু-পিছু করতে থাকেন। যেখানে আমরা দেখতে পাই কারিগর ও যন্ত্র কীভাবে বাদ্যের তালে তালে একে অন্যকে অনুকরণ করে যাচ্ছে সৃষ্টির খেলায়।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন